অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে দ্বিতীয় ম্যাচে হারিয়ে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ

সুবর্ণ স্পোটস কর্ণার ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে এই জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো টাইগাররা। টাইগাররা ৮ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে এই ম্যাচে জয়লাভ করে।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচে সমতা আনার লক্ষ্যে টস জিতে এবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। এ ম্যাচেও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার জশ ফিলিপ ও অ্যালেক্স ক্যারি। ৫ দশমিক ৪ ওভারে ৩১ রানের মধ্যে বিদায় নেন এই দুই ওপেনার।
তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৩ রানে ক্যারিকে বিদায় দেন অফ-স্পিনার মাহেদি হাসান। নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেয়ার আগে ১১ রান করেন ক্যারি। গতকাল প্রথম ম্যাচে ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যারিকে বোল্ড করেছিলেন মাহেদি। ফিলিপকে ১০ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তাকে বোল্ড করেন ফিজ। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন মিচেল মার্শ ও মইসেস হেনরিক্স। শুরুতে সর্তকার সাথে খেললেও, পরবর্তীতে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তারা। ১৪তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান রেট ৬ এর উপর নিতে পারেন মার্শ ও হেনরিক্স। তার আগ পর্যন্ত ৬ এর নিচেই ছিলো।

তবে ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৮৮ রানে এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ৩০ রান করা হেনরিক্সকে বোল্ড করেন সাকিব। তৃতীয় উইকেটে মার্শের সাথে ৫২ বলে ৫৭ রান করেন হেনরিক্স।

দলীয় রান তিন অংকে পৌঁছানোর আগে থেমে যায় মার্শের ইনিংসও। বাঁ-হাতি পেসার শরিফুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মার্শ। ৫টি চারে ৪২ বলে ৪৫ রান করেন মার্শ। তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৯৯ রান। ইনিংসের ২৩ বল বাকী ছিলো। এরপর ১৮তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাস্টন আগারকে শিকার করেন মুস্তাফিজ। ওয়েড ৪ ও আগার শুন্য রানে ফিরেন। হ্যাট্টিকের সুযোগ তৈরি হলেও, ওয়াইড দিয়ে সুযোগ হারান ফিজ। নিজের তৃতীয় ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি।।

পরের ওভারে ৩ রান করা আ্যাস্টন টার্নারকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম ও নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন শরিফুল। শেষ দিকে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মিচেল স্টার্কের ১৩ ও এন্ড্রু টাইয়ের ৩ রানের সুবাদে ১২১ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের মুস্তাফিজ ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন। শরিফুল ২টি, মাহেদি-সাকিব ১টি করে উইকেট নেন। দারুণ বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরে মোস্তাফিজ-সাকিবরা। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে মিশেল মার্শ সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন।
সিরিজে ডাবল লিড নিতে ১২২ রানের সহজ টার্গেটের জবাবটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ২১ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও সৌম্য সরকার। তৃতীয় ওভারে সৌম্যকে খালি হাতে ফেরান অস্ট্রেলিয়ার পেসার স্টার্ক। পরের ওভারে নাইমকে থামান অস্ট্রেলিয়ার আরেক পেসার জশ হ্যাজেলউড। ৯ রান করেন নাইম। দুই ওপেনারই বোল্ড হন। এরপর মাহেদি হাসানকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান। মারমুখী মেজাজে না থাকলেও, দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন সাকিব-মাহেদি। অষ্টম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পাকে লং-অফ দিয়ে ছক্কা মেরে দলের স্কোর ৫০এ নেন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মাহেদি। তবে পরের ওভারে ভাঙ্গে সাকিব-মাহেদি জুটি। ৪টি চারে ১৭ বলে ২৬ রান করা সাকিবকে বোল্ড করেন অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াম পেসার এন্ড্রু টাই। তৃতীয় উইকেট সাকিব-মাহেদি জুটি ৩২ বলে ৩৭ রান করেন। সাকিবের আউটে বিপদ বিপদেই পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফিরেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদি। রানের খাতা খোলার আগেই মাহমুদুল্লাহকে শিকার করেন স্পিনার অ্যাস্টন আগার। ১টি ছক্কায় ২৪ বলে ২৩ রান করা মাহেদিকে থামান জাম্পা। ১১ দশমিক ২ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মাহেদি। ঐ সময় ৫১ বলে ৫৫ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের। এ অবস্থায় জুটি বাঁধেন আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান। দেখেশুনে খেলার পাশাপাশি দ্রুত রানও তুলেছেন তারা। ১৩তম ওভারে ১১, ১৬ ওভারে ১৩ রান তুলে শেষ ৪ ওভারে জয়ের সমীকরণ ১৯ রানে নামিয়ে আনেন আফিফ-নুরুল। বাকী ১৯ রান তুলতে ১৬ বল খরচ করেন আফিফ ও নুরুল। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে অপরাজিত ৩৭ রান করেন আফিফ। ৩টি চারে ২১ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল।

আগামী ৬ আগস্ট একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় টি-টুয়েন্টি।

-বাসস

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০৩১