অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

সুবর্ণ স্পোর্টস কর্ণার ডেস্ক : ২০ ওভারে মাত্র ৯৪ রানের লক্ষ্য। যে কেউ এমন টার্গেটের কথা শুনলে ধরেই নিবেন জয় না পাওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না। হ্যাঁ, বাংলাদেশও সেই টার্গেটে জয় তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। তবে যারা টিভি পর্দায় খেলা দেখেছেন, তারা জানেন এই রান তুলতে বাংলাদেশকে কতোটা পরীক্ষা দিতে হয়েছে। শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে মাহমুদউল্লাদের।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতে ইতিহাস গড়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। কিছুদিন আগে জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে আসলো বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে ফিরেই ইতিহাস রচনা করে টাইগাররা। প্রথমারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় অজিদের। আরও একটি ইতিহাস রচনা হলো আজ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ দল। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন নাসুম আহমেদ।

৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১১ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। ফিন অ্যালেনের বলে আউট হন তিনি। এরপর উইকেটে আসেন সাকিব আল হাসান। তিনিও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৮ বলে ৮ রান করে এজাজ প্যাটেলের বলে সাজঘরে ফেরত যান এই অলরাউন্ডার। সাকিবের আউটের পর কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন মুশফিকের রহিমও।

তাদের আউটের পর দলকে জয়ের প্রান্তে নিতে লড়াই করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ওপেনার নাঈম শেখ। দলীয় ১৫তম ওভারে এক চার ও এক ছক্কায় ৩৫ বলে ২৯ রানের করে রানআউটের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। তার আউটের পর আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক। ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ এক চার ও দুই ছক্কায় ৪৮ বলে ৪৩ রান করেন।

এর আগে, টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে নাসুম আহমেদের স্পিন ঘূর্ণির পর মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে বিপাকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। চার ওভারে মাত্র ১০ রানে নিউজিল্যান্ডের প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান নাসুম। ইনিংসের প্রথম ওভারেই নিউজিল্যান্ডের ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন নাসুম।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে সাকিব আল হাসান দেন ১০ রান। দাপটের সঙ্গে ব্যাট করতে থাকা ফিন অ্যালানকে নাসুম তার ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য করেন। রিভার্স সুইপ খেলতে চেয়েছিলেন ফিন। কিন্তু এবার টাইমিং মেলাতে না পেরে মারমুখী কিউই ওপেনার ৮ বলে ১২ রান করে সাইফউদ্দিনের সহজ ক্যাচে পরিণত হন।

১৬ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও উইলি ইয়াং। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান। ইনিংসের ১১তম ওভারে অধিনায়ককে থামিয়ে দেন মেহেদী। তার ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ২৬ বলে এক চারে ২১ রান করে মাঠ ছাড়েন ল্যাথাম। ১২তম ওভারে বোলিং এসে নতুন ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলাসকে বোল্ড করেন নাসুম আহমেদ।

এরপরই নিউজিল্যান্ড শিবিরে নতুন করে আঘাত হানেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তার জোড়া শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন টম ব্লান্ডেল ও কলিন ম্যাককলিন। দলীয় ১৯তম ওভারে এজাজ পেটেলকে বোল্ড করে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান সাইফউদ্দিন। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে থাকা উইল ইয়ংকে ৪৬ রানে আউট করার পরের বলেই ব্লেয়ার টিকনারকেও সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ। ফলে ৩ বল হাতে থাকতেই সফরকারিদের ৯৩ রানে অলআউট করে টাইগাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড : ৯৩/১০ (১৯.৩ ওভার)
ইয়ং ৪৬, ল্যাথাম ২১
নাসুম ৪-২-১০-৪, মুস্তাফিজ ৩.৩-০১২-৪, সাইফউদ্দিন ৩–০-১৬-১, মেহেদী ৪-০-২১-১
বাংলাদেশ : ৯৬/৪ (১৯.১ ওভার)
রিয়াদ ৪৩*, নাঈম ২৯
এজাজ ৯/২, ম্যাককঞ্চি ৩৪/১
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০