আগামী এক বছর কৃষি ঋণের সুদ ৪ শতাংশ

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কৃষিঋণে সুদ ভর্তুকি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণত কৃষিঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন কৃষকরা। তবে এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো সুদ পাবে ৯ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ধান, গমসহ সকল দানাশস্য, অর্থকরি ফসল, শাকসবজি ও কন্দাল ফসল চাষের জন্য এই ঋণ নিতে পারবেন কৃষকরা। গতকাল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

 

 

ঐ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামীতে খাদ্যের উত্পাদন ও খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে কৃষিখাতে শস্য ও ফসল চাষের জন্য কৃষক পর্যায়ে স্বল্প সুদে কৃষিঋণ সরবরাহ করা অত্যাবশ্যক। আমদানি বিকল্প ফসলসমূহ (ডাল, তৈলবীজ, মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা) চাষ করার জন্য কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদহারে কৃষিঋণ দেওয়া হচ্ছে। এখন আমদানি বিকল্প ফসলসমূহের পাশাপাশি কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে উল্লিখিত ধান, গমসহ সকল দানাশস্য, অর্থকরি ফসল, শাকসবজি ও কন্দাল ফসল চাষের জন্যও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা হিসেবে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদহারে কৃষিঋণ বিতরণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো। বিতরণকৃত ঋণসমূহের বিপরীতে ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকৃত সুদ-ক্ষতি বাবদ ৫ শতাংশ হারে সুদ-ক্ষতি পুনর্ভরণ সুবিধা প্রাপ্য হবে। অর্থাত্ ব্যাংকগুলো ৯ শতাংশ সুদেই ঋণ দেবে। কিন্তু কৃষকের কাছ থেকে নেবেন ৪ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদ-ক্ষতি পুনর্ভরণের আওতায় নিজস্ব তহবিল থেকে এই অর্থ পরিশোধ করা হবে।

 

 

 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে এই সুদহার কার্যকর হবে। নতুন ঋণ ৪ শতাংশ সুদে দিতে হবে। আর বিদ্যমান ঋণের সুদহার ১ এপ্রিল থেকে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে এপ্রিল-জুন সময়ে যে কিস্তি আদায় বা সমন্বয় করা হবে সেই সুদে ভর্তুকি দেওয়া হবে। ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। এই সময়ের পর যে পরিমাণ ঋণ অনাদায়ী থাকবে তার বিপরীতে সাধারণ সুদ অর্থাত্ ৯ শতাংশ সুদহার প্রযোজ্য হবে।

 

 

 

আগামী ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে ভর্তুকি প্রদান করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছর শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে কৃষিখাতে বিতরণকৃত ঋণ, আদায় ও সমন্বয়ের তথ্যসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি যাচাই-বাছাই করে সুদ ভর্তুকি পরিশোধ করবে।

 

 

 

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কৃষিখাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা আছে ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ শস্যখাতে অর্থাত্ ভর্তুকির জন্য নির্ধারিত খাতে দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। কৃষিখাতের অন্যান্য উপখাত মৌসুমভিত্তিক ফুল ও ফল, মত্স্য চাষ, পোলট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাতের ঋণে সুদ ভর্তুকি দেওয়া হবে না। তবে আগে গঠিত দুটি তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। এর আগে কৃষিখাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঐ তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নেওয়া যাবে। নিম্নআয়ের পেশাজীবী, কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার আরেকটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এখান থেকে কৃষিখাতের উদ্যোক্তা ও কৃষকরা ঋণ নিতে পারবেন।

শেয়ার করুনঃ

150 thoughts on “আগামী এক বছর কৃষি ঋণের সুদ ৪ শতাংশ”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০৩১