জাহান্নাম থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন আল্লাহ

সুবর্ণ ইসলাম কর্ণার ডেস্ক : আল্লাহতায়ালা এ পৃথিবীতে কত রকমের প্রাণী যে সৃষ্টি করেছেন তার কোনো সংখ্যা নেই। মনীষীরা বলছেন, শুধু স্থলভাগেই নাকি রয়েছে ৪০ হাজার প্রাণী। তেমনি জলভাগেও রয়েছে আরও ৪০ হাজার। এ হাজার হাজার প্রাণীর মধ্যে মানুষই হলো আশরাফুল মাখলুকাত, তথা সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের মধ্যে আল্লাহ এমন কিছু গুণ ও বৈশিষ্ট্য রেখেছেন, যা আর কোনো প্রাণীর মধ্যে পাওয়া যায় না। এই যেমন মানুষের সুশ্রী চেহারা, সুগঠিত দেহ, বৈচিত্র্যময় ভাষা, সুষম প্রকৃতি। এ ছাড়া মানুষকে দিয়েছেন পৃথিবী চমকে দেয়ার মতো আবিষ্কারের জ্ঞান। এ রকম আরও বেশ কিছু স্বতন্ত্র নিয়ামতে সমৃদ্ধ মানুষকে তিনি সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘অবশ্যই আমি আদমসন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং তাদের জলে ও স্থলে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছি।’ সুরা ইসরা, আয়াত ৭০।
যে মানুষকে আল্লাহ এত সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন, জ্ঞানে-গুণে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সম্মানিত করেছেন সে মানুষ কি এ সম্মান ধরে রাখতে পারছে? পারছে না। মানুষকে আল্লাহ পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন আর মানুষ আজ তাঁর সৃষ্টিজগৎকে ধ্বংস করে চলেছে। মানবিকতাকে খুন করে হয়ে উঠেছে এক একটা দানব। রোজ পত্রিকার পাতা আর টিভির স্ক্রিনে ভেসে ওঠে তাদের অপকর্মের খবর। এ জন্যই তো আল্লাহ বলেছেন, ‘সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে কলহ সৃষ্টি করবে।’ সুরা মুহাম্মদ, আয়াত ২২।
আল্লাহতায়ালা চেয়েছিলেন মানুষ তাঁর সাজানো এ বাগানটাকে গুছিয়ে রাখুক। অন্তত মানুষ মানুষের পাশে থাকবে। বিপদে-আপদে, সমস্যা সংকটে একজনের পাশে আরেকজন ছুটে যাবে। সাহায্য করবে। নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করাই তো মানুষের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এই মানুষের মধ্যেই এমন কিছু মানুষ আছে যারা দেখতে মানুষের মতো হলেও আচরণে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট। এরা নিজের স্বার্থের জন্য অথবা সামান্য মতের অমিল হলেই মানুষ হয়ে আরেক মানুষের বুকে ছুরি চালায়, গলা কাটে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে গণহারে মানুষ হত্যা করে। যেখানে পৃথিবীর শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি হত্যাকা-ও কাম্য নয়, সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছে মানুষই। তারা কি আল্লাহর সে বাণী শোনেনি? ‘যখন কেউ কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করল সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করল।’ সুরা মায়েদা, আয়াত ৩২।
শুনেও তারা অমানুষের আচরণ করছে। মানুষের এ অমানবিকতার কাছে অভিশপ্ত শয়তানও যেন লজ্জিত। শুধু অনুতপ্ত হয় না মানুষ। ফিরে আসে না তার সুমহান আদর্শে। অমুসলিমরা তো বটেই, তাওহিদে বিশ্বাসী মুসলমানও ভুলে গেছে আত্মসুখ বা আত্মভোগে কোনো তৃপ্তি নেই। পরোপকারেই প্রকৃত সুখ। ইসলামের প্রাণপুরুষ নবী মুহাম্মদ (সা.) তো এ শিক্ষাদানের জন্যই আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। মানুষের দুঃখ দেখলে তাঁর চোখ ভারী হয়ে উঠত। টপটপ করে গড়িয়ে পড়ত অশ্রু। সে যে ধর্মেরই হোক। তাঁর ঘোর শত্রু অমুসলিমদের সঙ্গেও করতেন কোমলচিত্ত আচরণ। মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য, দুঃখ মোচনের চিন্তায় তাঁর ঘুম হতো না। হেরার গুহায় তো এই মানুষের কল্যাণেরই চিন্তা করতেন।

শেয়ার করুনঃ

144 thoughts on “জাহান্নাম থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন আল্লাহ”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫
    ১৬১৭১৮১৯২০২১২২
    ২৩২৪২৫২৬২৭২৮