তিন কারণে জাহান্নাম হবে আপনার ঠিকানা

সুবর্ণ ইসলাম কর্ণার ডেস্ক : মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীর মাধ্যমে মানবজাতিকে জান্নাতের পথের দিশা দিয়েছেন এবং যেসব কাজ মানুষকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়, সে বিষয়েও সচেতন করেছেন। রাসুল (সা.) বিভিন্ন সময় উম্মতকে বিভিন্ন কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন। আজ আমরা আলোচনা করব এমন তিনটি কাজ সম্পর্কে, যেগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য রাসুল (সা.) বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন।
হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না : অভ্যস্ত মদ্যপায়ী, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ও জাদুতে বিশ্বাসী। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৯৫৮৭)
মদপানে অভ্যস্ত হওয়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মদপানকারী ব্যক্তির ৪০ দিনের নামাজ কবুল করা হয় না। সে তাওবা করলে তবে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। যদি আবার সে মদপান করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল করেন না। যদি সে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা গ্রহণ করেন। সে যদি আবার মদপানে লিপ্ত হয়, তাহলে তার ৪০ দিনের নামাজ আল্লাহ তাআলা গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। সে চতুর্থবারে মদপানে জড়িয়ে পড়লে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করবেন না এবং তাকে ‘নাহরুল খাবাল’ হতে পান করাবেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আবু আবদুর রাহমান (ইবনু উমার)! খাবাল নামক ঝরনাটি কী? তিনি বললেন, জাহান্নামিদের পুঁজের ঝরনা। (তিরমিজি, হাদিস : ১৮৬২)
আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা : ইসলাম সব সময় আত্মীয়তা রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। যারা অযৌক্তিক কারণে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে, মহান আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর (ইবাদত করার) দেওয়া প্রতিশ্রুতির পর তা লঙ্ঘন করে আর (আত্মীয়তার) সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখার আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে এবং পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ। আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস।’ (সুরা আর রাদ, আয়াত : ২৫)
জাদু-টোনায় বিশ্বাস করা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরি করেনি, বরং শয়তানরা কুফরি করেছে। তারা মানুষকে জাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাজিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারুত ও মারুতের ওপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরি কোরো না। এর পরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোনো ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত, যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোনো অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদের বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১০২)
এই আয়াত দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে জাদু-টোনার নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। বরং আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত জাগতিক নিয়ম ও নির্দেশেই তা প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ, যা কখনো মঙ্গল বয়ে আনে না। বরং এগুলো মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের ধ্বংস ডেকে আনে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০