নিঝুম দ্বীপে দ্বিতীয় স্বামীর সহায়তায় দ্বিতীয় স্ত্রী গণধর্ষণের শিকার, স্বামীসহ ৪ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিনিধি

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপে দ্বিতীয় স্বামীর সহায়তায় গার্মেন্টস কর্মী দ্বিতীয় স্ত্রী (২৫) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাতিয়া থানার নিঝুমদ্বীপ ইউপির ০৮ নং ওয়ার্ডের মোক্তারিয়া ঘাটের পূর্বদিকে মেঘনা নদীর তীরে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ সকালে নির্যাতিতা নিঝুম দ্বীপ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করে। পরে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম পিপিএম এর নির্দেশে দুপুর দিকে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নারীর স্বামী মো. সোহেল প্রকাশ রোহিঙ্গা সোহেল (৩০)সহ চারজনকে গ্রেফতার করে। সোহেল নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে । গ্রেফতারকৃতরা অন্যরা হলো- নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে কলোনীর মো. আক্তার (২৭), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বান্দাখালীর মাকছুদুল হকের ছেলে মো. হক সাব (৩৪), ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে কলোনীর সাইদুল হকের ছেলে রাশেদ মাঝি (৪২)। গ্রেফতারকৃতদের নিঝুম দ্বীপ থেকে বিকেলে হাতিয়া থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তিনি তার শিশু কন্যাসহ গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়া এসে বিকেলে হাতিয়া থেকে নিঝুম দ্বীপে তাঁর স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। আগেই তিনি নিঝুম দ্বীপের দিকে রওয়ানা হওয়ার বিষয়ে ফোনে স্বামীকে জানান।
সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার দিকে তিনি নিঝুম দ্বীপের ঘাটে পৌঁছেন। এরপর একটি মোটরসাইকেলে ওঠেন। ওই মোটরসাইকেলে আরও একজন পুরুষ ছিল। তারা তাকে নিঝুম দ্বীপের মোক্তারিয়ার ঘাট থেকে প্রায় আধাকিলোমিটার পূর্ব দিকে নদীর তীরে নিয়ে যায় । সেখানে ওই দুইজনসহ তিনজন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তার স্বামী সোহেলও সেখানে এসে হাজির হয় এবং ওই তিনজনের সামনে সে তাকে ধর্ষণ করে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি ) ডি আই ওয়ান ছৈয়দ ফজলে রাব্বী জানান, গণধর্ষণের ঘটনার পর আজ বুধবার সকালে নির্যাতনের শিকার নারী নিঝুম দ্বীপ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে ঘটনাটি মৌখিকভাবে জানান। বিষয়টি জানার পর জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। অভিযুক্তদের নিঝুম দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানাযায়, রোহিঙ্গা সোহেল ওই নারীর দ্বিতীয় স্বামী। ওই নারীরও সেটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। চার বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বেশকিছুদিন আগ থেকে স্বামী সোহেল তাকে তালাক দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিল । তালাক দেয়ায় স্বামীর সহায়তায় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটনানো হয়েছে।

হাতিয়া থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আজ সকালে ওই নারী প্রথমে নিঝুম দ্বীপ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। সেখান থেকে তাকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি জেলা পুলিশ সুপারকে তা অবহিত করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাৎক্ষনিক অভিযান শুরু করে পুলিশ। দুপুর দুইটার মধ্যে অভিযুক্ত চার আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় নারী নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।ওসি আরো জানা, নির্যাতিতা নারীকে আগামিকাল বৃহস্পতিবার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০৩১