সুবর্ণ প্রভাত প্রতিবেদন : বঙ্গপোসাগরের পাড়ে সবুজ বনবেষ্টিত জীববৈচিত্র্যের অপরূপ সমারোহ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি নৈসর্গিক নিঝুমদ্বীপ। এ দ্বীপে রয়েছে বিস্তীর্ণ সমুদ্রসৈকত। গভীর সমুদ্র থেকে ইথারে ভেসে আসে সমুদ্রের আহ্বান। নির্মল বাতাসে এসময় মন যেন তন্ময় হয়ে হারিয়ে যায় সুদূর দিগন্তে। অ™ভূত এক নির্জনতা ঘিরে আছে দ্বীপের অভ্যন্তরে। এখানে ইলেক্ট্রনিক্স হর্ণের কানফাটা আওয়াজ নেই। নেই যানজট। আছে সৈকতে দাঁড়িয়ে অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভার অপরূপ দৃশ্য। রয়েছে জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত গভীর ঘন বনভূমি। সমুদ্রতটে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমিতে বিরল প্রজাতির নানা জাতের পাখির কলকাকলিতে, কুহু কুহু ও কিচিরমিচির ডাক এবং অসংখ্য হরিণের ছুটোছুটি নিস্তব্দ বনভূমি জেগে উঠে। বিশাল বনরাজির পাশে সমুদ্র জলে গ্যাঞ্জেলিক ডলফিনের দৌড়ঝাঁপ মন জুড়িয়ে দেয়। শান্ত, স্নিগ্ধ, নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের আকর্ষণে টেনে আনে এ দ্বীপে ভ্রমণবিলাসি পর্যটক ও সৌখিন পাখি প্রেমিকদের।
অবস্থান : ১৯৫০ সালে সাগরের কূলঘেঁষে জেগে উঠে নিঝুমদ্বীপের চরভূমি। দেশের দক্ষিণণ্ডপূর্বাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকার মাঝখানে এর অবস্থান। কয়েক যুগ ধরে এর আয়তন বেড়ে ৮১ বর্গকিলোমিটার দাঁড়িয়েছে। নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার পশ্চিম-দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীবেষ্টিত নিঝুমদ্বীপ। হাতিয়া সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। পূর্বে এ দ্বীপটি জাহাজমারা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড ছিল। বর্তমানে নিঝুমদ্বীপ নামে এটি নবগঠিত ইউনিয়ন।
নামকরণ : ১৯৭০ সালে প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর দুর্ঘটনাকবলিত কোনো এক জাহাজ থেকে ভেসে আসে দ্বীপে কয়েক বাক্স কমলা। চরে কমলা পড়ে থাকতে দেখে জেলে ও বাতাইন্যারা (গরু ও মহিষের রাখাল) এ দ্বীপের নাম রাখে কমলার চর। ১৯৬৯ সালে জরিপকারীরা এ চরে জরিপ করতে গিয়ে ওসমান নামের এক রাখালের দেখা পায়। তার নাম অনুসারে চর ওসমান রাখা হয়। যা বনবিভাগের তালিকায় রেকর্ডভূক্ত রয়েছে। পরে হাতিয়ার সাবেক এমপি, কৃষি ও বন প্রতিমন্ত্রী মরহুম আমিনুল ইসলাম কালাম এ দ্বীপের নাম রেখেছেন নিঝুমদ্বীপ। এ তথ্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার।
সাগরের বুকে নতুন এক বাংলাদেশ : বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠছে এক বিশাল ভূখণ্ড। হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণে মেঘনার মোহনায় বঙ্গোপসাগরের বুকে ধমারচর। এ ধমারচরের সাথে সংযুক্ত হয়ে ভেসে উঠছে বঙ্গোপসাগরে শত কিলোমিটার নতুন চর। জোয়ারের সময় ডুবে যায়, ভাটার সময় মাছের পিঠের মতো এ চর ভাসতে থাকে। বঙ্গোপসাগরের স্বাভাবিক পানির স্তর থেকে এ চর উঁচু। দিন দিন পলি মাটি ভরাট হয়ে চরের আয়তন বাড়ছে। ধমারচর থেকে ৪০-৫০ কিলোমিটার দূরে ভাটার সময় জেলেদের নৌকা আটকে যায়। স্থানীয় লোকজনের মতে, এ চরের সীমানা এক থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার। এ চর পরিপূর্ণতা লাভ করলে বাংলাদেশের মানচিত্রে যোগ হবে নতুন এক বিশাল ভূখণ্ড। দমারচরের সামনে জেগে ওঠা লেংটা ও জালিয়ারচরে বনবিভাগ ইতিমধ্যে বনায়ন কাজ শুরু করেছে।
বনায়ন ও জীববৈচিত্র্য : বনবিভাগ ১৯৭১ণ্ড৭২ সালে নিঝুমদ্বীপের শতফুল নামক স্থানে চর ওসমান বিট অফিস স্থাপন করে বনায়ন শুরু করে। পরে ১৯৯২ সালে জাহাজমারা রেঞ্জের আওতায় দ্বীপের নামার বাজারে বিট অফিস স্থানান্তর করে। তখন বনবিভাগ ১২ হাজার ৩৬০ একর ভূমিতে ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজন করে। রোপন করা হয়েছে কেওড়া, গেওড়া, বাইন, বাবুল, করঞ্জা, পুনন্যাল, নোনাঝাউসহ নানা জাতের বৃক্ষ। বনে ছেড়ে দেয়া হয় চিত্রল হরিণ, বেজি, গুঁইসাপ, অজগর, মহিষ ও বন্য কুকুর। সৃজনকৃত বন এখন গভীর অরণ্যে পরিণত হয়েছে। বনগুলোতে গাঙচিল, বক, হিরণ, বালিহাঁস, সারসি, ডাহুক, চিল, ঈগল, মাছরাঙা, বউ কথা কও, হরিয়াল, পানকৌড়ি, কাঠঠোকরা, শালিক, দোয়েল, বুলবুলিসহ দেশী ও অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়। বনের ভিতরে বয়ে যাওয়া খালগুলো প্রকৃতিকে করেছে আরো আকর্ষণীয়। বনের পাশে সমুদ্রাঞ্চলে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির গ্যাঞ্জেলিক ডলফিনের নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়। বনে ৬৬ প্রজাতির গাছপালা, ১১৭ প্রজাতির বন্য প্রাণী, ৭৮ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এতে করে পুরো বন এলাকা প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের মিলন ভূমিতে পরিণত হয়।
বনের আকর্ষণ হরিণ : ১৯৭৮ সালে জীববৈচিত্র্য ও পর্যটকদের আরো আকর্ষণীয় করতে বনবিভাগ ৪ জোড়া চিত্রল হরিণ নিঝুমদ্বীপের বনে অবমুক্ত করে। ২০০৬ সালে এক জরিপে হরিণের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১৪ হাজার। হরিণের বংশ বৃদ্ধিতে খাদ্য ও পানি সংকট দেখা দেয়। হরিণের প্রধান খাদ্য কেওড়া গাছের পাতা। গাছগুলো বড় হয়ে হরিণের নাগালের বাইরে চলে যায়। বনে বানর না থাকায় গাছের ঢাল ও পাতা নিচে ফেলার কেউ নেই। এতে খাদ্য সংকট এবং বনের ভিতর অনেক খাল পলি মাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি সংকট তীব্রতর হয়। এতে করে হরিণ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন চরে ও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিদিন হিংস্র কুকুরের শিকার হচ্ছে হরিণের দল। অন্যদিকে সংরক্ষিত বন এলাকায় ঘেরাও না থাকায় দস্যুদের হরিণ শিকারের সুযোগ সৃষ্টি হয়। যার কারণে দিনদিন হরিণের সংখ্যা কমে আসছে। বনের পাশে রয়েছে চারণভূমি। সকালে ও বিকালে হরিণ দলবেধে চারণভূমিতে এসে জড়ো হয়।
দর্শনীয় স্থান : বনঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লেকগুলোর মধ্যে চৌধুরীর খাল, পটকাখালী খাল, সোয়ানখালী খাল, ডুবাই খাল, ধামসাখালী খাল, ভট্রোখালী খাল, কাউনিয়া খাল, লেংটা খাল। এ দর্শনীয় খালগুলো জোয়ারের পানিতে পূর্ণ হলে অপরূপ মায়াবী সৌন্দর্য ছড়ায়। চৌধুরীর খাল ও ডুবাই খালের পাড়ে বনের মায়াবী হরিণের দল পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সমুদ্র পাড়ে ১২ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। সৈকতে ভ্রমণবিলাসীদের মনে আনন্দ ছড়ায়। আর সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। ডুবাই খালের পাশে ও বন্দরটিলায় পিকনিক স্পট।
যাতায়ত ব্যবস্থা ও নিরাপদ ভ্রমণ : নিঝুমদ্বীপ যেতে হলে নদীপথে জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করতে হয়। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত নদী থাকে শান্ত। এ সময় ভ্রমণকারীদের জন্য নদীপথ নিরাপদ। নিঝুমদ্বীপ যেতে হলে ঢাকার সায়েদাবাদ বাসটার্মিনাল থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন বাসযোগে অথবা উপকূল ট্রেনে জেলা শহর মাইজদীতে আসতে হবে। মাইজদী থেকে সড়ক পথে যেতে হবে প্রায় ৪৬ কিলোমিটার হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটে। সেখান থেকে সিণ্ডট্রাকে, ট্রলারে ও স্পিডবোটে যেতে হবে ৩০ কিলোমিটার দূরে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে। সে স্থান থেকে সড়ক পথে ওছখালী হয়ে ৩১ কিলোমিটার জাহাজমারার মুক্তাদিয়ার ঘাট। সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার নদীপথ পার হলেই নিঝুমদ্বীপ। অথবা চেয়ারম্যান ঘাট থেকে ট্রলার ও স্পিডবোটে সরাসরি নিঝুমদ্বীপ যাওয়া যায়। এছাড়াও ঢাকার সদরঘাট ও চট্টগ্রাম থেকে স্টিমারযোগে সরাসরি হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে এসে নিঝুমদ্বীপ যেতে হবে।
থাকার ব্যবস্থা : নিঝুমদ্বীপে প্রতিবছর আসে হাজারো পর্যটক। তাদের থাকার সুবিধার্থে গড়ে উঠেছে রেস্টহাউজ ও বোর্ডিং। রয়েছে বনবিভাগের রেস্টহাউজ, জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল অবকাশ, নামার বাজার জামে মসজিদ বোর্ডিং, বন্দর টিলায় মেস উপকূলীয় পর্যটন রিক্রিয়াশান সেন্টার (শেরাটন) ও সিডিএসপির রেস্টহাউজ। থাকার সুবিধার পাশাপাশি খাবারেরও সুবিধা রয়েছে।
অফুরন্ত পর্যটনের সম্ভাবনা : সাগরকন্যা খ্যাত নিঝুমদ্বীপ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকো ট্যুরিজম সম্প্রসারণের আরো সুবিধা সৃষ্টি, নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা, থাকার সুব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নিরাপত্তা বিধান করা হলে আগের চাইতে অনেক বেশি পর্যটকদের সমাগম ঘটবে। এতে করে বিভিন্ন দেশের পর্যটন শিল্পের মতো প্রচুর রাজস¦ আয়ের দ্বার উন্মেচিত হবে।
জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বন : ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল তৎকালীন সরকার নিঝুমদ্বীপসহ পার্শ্ববর্তী ১১টি জেগে ওঠা চর নিয়ে ৪০ হাজার ৩৯০ একর বনভূমি জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে। বর্তমান সরকার ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যানের অংশসহ ১৮ হাজার ১৬ একর বনভূমিকে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করে। জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বন এলাকা ঘোষণা করা হলেও একশ্রেণীর ভূমিগ্রাসী দস্যুরা বন নিধন করে ভূমিহীনদের বসতি স্থাপনে উৎসাহিত করছে। গত কয়েক বছরে ৬ থেকে ৭ হাজারের অধিক একর বনভূমি বেদখল হয়ে যায়। বনের নির্দিষ্ট সীমানা চিহ্নিত ও ঘেরাও না থাকায় এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বনবিভাগের ভূমি নিয়ে বিরোধের সুযোগ নিচ্ছে বন নিধন দস্যুরা।
বনবিভাগের উন্নয়ন : নিঝুমদ্বীপে জাতীয় উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বনায়নসহ হরিণের পানির চাহিদা মেটানোর জন্য ৪টি পুকুর-কাম-কিল্লা নির্মাণ করা হয়। বনবিভাগের অফিস-কাম দ্বিতল ভবন রেস্ট কর্ণার এবং বনবিভাগ নিঝুমদ্বীপের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য অবলোকন করতে পর্যটকদের জন্য ইতোমধ্যে ৫০ ফুট উঁচু টাওয়ার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। হরিণ ও পশুপাখি দেখার জন্য বনের উচ্চতা সমান ২০ ফুট পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সম্ভব হয়নি। একই সাথে পুকুর, খাল ও লেক পুনঃখনন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জনসচেতনা বৃদ্ধি কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।
জনবসতি : গত তিন যুগ ধরে নিঝুমদ্বীপে ১৫ হাজার একর খাসভূমিতে গড়ে উঠেছে জনবসতি। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এ দ্বীপে রয়েছে ২টি বাজার, বেসরকারি ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার নির্মিত ৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ১টি পুলিশ ফাঁড়ি এবং নবগঠিত একটি ইউনিয়ন পরিষদ।
জীবন-জীবিকা : প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে এ দ্বীপের মানুষগুলো বেঁচে আছে। নদীভাঙা গৃহহীন, ছিন্নমূল, ভূমিহীন মানুষগুলো বিভিন্ন চর থেকে এসে এ দ্বীপে বসতি স্থাপন করে। দ্বীপের ৭০ ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী ও ৩০ ভাগ কৃষিজীবী। গভীর সমুদ্র ও নদীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরে জেলে সম্প্রদায় জীবিকানির্বাহ করে। প্রায় ২০ হাজার জেলে মহাজনদের দাদনের উপর নির্ভরশীল। মাছ ধরার জাল ও নৌকাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে হয় দাদনের টাকা দিয়ে। সারাবছর মাছ ধরে দাদনের টাকা পরিশোধ করতে হয় তাদের। মাছ পেলে সিংহভাগ চলে যায় মহাজনের ঘরে। মহাজনের কৃপায় দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোটে, আর মাছ না পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে ও অনাহারে থাকতে হয় জেলেদের। অন্যদিকে নদীতে মাছ ধরতে গেলে দস্যুদের চাঁদা দিতে হয়ে জেলেদের। চাঁদা না দিলে জাল, নৌকা ও জীবন সবই হারাতে হয়। এই দুর্ভোগ লেগে আছে সারা বছর। আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেছেন জেলে বাতেন, আবুল হাসেম, সামছু উদ্দিন ও মোতালেবসহ আরো অনেকে। তারা বলেছেন, তাদের বেঁচে থাকার জন্য সরকারি আর্থিক সহযোগিতা তো নেই; বরং দস্যু দমনেও প্রশাসন এগিয়ে আসছে না। অন্যদিকে ৩০ ভাগ দরিদ্র মানুষ সরকারি খাস জমিতে ও অন্যের জমিতে চাষ করে, বর্গা খেটে এবং কামলা খেটে জীবন বাঁচিয়ে রাখেন। এ দ্বীপে বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার পর হারিকেন আর কুপির বাতি কিছু সময় জ্বললেও পরে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বসবাসকারীরা থাকে আতংকিত। নেই দ্বীপে কোনো বেড়িবাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ দ্বীপে বেড়িবাঁধ ও হাতিয়া-নিঝুমদ্বীপ ক্রসড্যাম নির্মাণের একটি প্রকল্প ২০০৯ সালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে পাঠালেও তা ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে। তবে উপজেলা এলজিইডি বসবাসকারীদের সুবিধার্থে দ্বীপে ১২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, কয়েকটি ব্রিজ ও কালভাট নির্মাণ করে।