নোবিপ্রবিতে বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট পালিত

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহত বঙ্গবন্ধু কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং ওই দিনের ঘটনায় শাহাদত বরণকারীদের স্মরণে শোক শোভাযাত্রা, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকালে একটি শোক শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। পরে সেখানে ২১ আগস্টকে প্রতিপাদ্য করে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. দিদার-উল-আলম। অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতেদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।


আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভিসি বলেন, ২১ আগস্ট বাঙালির জীবনে অন্যতম একটি শোকের দিন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে খুনিরা এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ সেদিনের সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ২৪ জন নিহত হয়েছিল। ’৭১-এর পরাজিত পাকিস্তানি মনোভাবাপন্ন এদেশীয় কিছু যড়যন্ত্রকারী এ ধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনা সেদিন ঘটিয়েছিল। কিন্তু ’৭১-এর পরাজিত শক্তি সেদিন তাদের পরিণতির কথা চিন্তা করেনি, যা আজ দৃশ্যমান। এর আগে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে আমরা হারিয়েছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তবে তারা জাতির পিতার আদর্শকে ধ্বংস করতে পারেনি, প্রবল জীবনী শক্তিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম অনেক সুশিক্ষিত, তারা বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে তারা অনুভব করতে পারে। নতুন প্রজন্ম জানে কে এই দেশের রূপকার, এদেশের জন্য কার অবদান, ত্যাগ সবচেয়ে বেশি। ’৭৫-এর হত্যাকারীরা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আরেকটি পঁচাত্তর সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, যা একই সূত্রে গাঁথা। সেদিনের অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিতেই সব পরিষ্কার যে, কাদের প্রত্যক্ষ মদদে তারা এ জঘন্য হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। জাতির জনককে হত্যা করেছে যারা তাদের উত্তরসূরিরাই ২১ আগস্ট হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যার চেষ্টা করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু তারা সফল হয়নি। নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে। উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে দেশ। যা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যার সুযোগ্য নেতৃত্বে। জাতির পিতার রক্তের ঋণ কোনো দিনও শোধ হবে না, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করে যেতে হবে। ভিসি অধ্যাপক দিদার-উল-আলম বক্তব্যে ’৭১-এর সকল শহিদ, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহিদ এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহত সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

ছাত্র উপদেষ্টা ও শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান বিপ্লব মল্লিকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজনুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন ও অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দীন পলাশ।
অনুষ্ঠানে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, আইআইএস’র পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দসহ ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে ভয়াল ২১ আগস্ট নিহতদের স্মরণে নোবিপ্রবি কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুুষ্ঠিত হয়। -প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০