নিজস্ব প্রতিনিধিঃইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, জরিমানা ও ভাঙচুর বন্ধের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইটভাটার মালিক-শ্রমিকরা। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ব্যানারে মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ইসমাইল ও সাধারণ সম্পাদক কে এম আফতাব উদ্দিন’সহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবন্দ ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, দেশের রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি’সহ সকল অবকাঠামো বিনির্মানে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখছে ভাটাগুলো। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে ইটভাটার মালিকগন বায়ুদূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করে জ্বালানী সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দূষন করছে, জৈব বস্তু পোড়ানোতে ৪০% এবং যানবাহনের কালো ধোয়া ৫০%, অথচ পূর্বে ইটভাটার দূষনমাত্রা ছিল ৫৮৭%। বিদ্যমান জিগজাগ ভাটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষন কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এই শিল্পে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছে, যেখানে ৫০ লাখ পরিবার তথা ২কোটি মানুষের রুটি রুজীর ব্যবস্থা রয়েছে। ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লোকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইভাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই ভাটা সমূহ বন্ধ হয়ে গেলে সমূদয় ব্যাংক লোন অনাদায়ী থেকে যাবে। ইটভাটার মালিকগণ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব দিয়ে থাকেন।
পরে তারা জিগজাগ ইট ভাটা বন্ধের প্রতিবাদ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন (সংশোধন) আইন ২০১৯ এ বর্ণিত জিগজ্যাগ ইটভাটার ছাড়পত্র ও লাইসেন্স প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনের জন্য বাংলাদেশ হট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ৭টি প্রস্তাব উল্লেখ করে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
শেষে তাদের প্রস্তাবিত দাবিগুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষ আলোচনায় না বসলে ইদের পরে ঢাকায় মহাসমাবেশ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় পদযাত্রার ঘোষণাও দেন তারা।