নিজস্ব প্রতিনিধিঃআন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শনিববার সকালে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর টাউনহল মোড়ে জেলা নারী অধিকার জোট আয়োজিত ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এর আগে শোভাযাত্রা বের করা হয়।
মানববন্ধন ও সমাবেশে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। এ সময় ঘরে, বাইরে, কর্মস্থলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, যানবাহনে সর্বত্র নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মন্তব্য করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে এর কঠোর সমালোচনা করা হয়।
সমাবেশে ২০২২ সালে নোয়াখালী জেলা শহরের লক্ষীনারায়নপুরে নিজ বাসায় ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের শিকার স্কুলছাত্রী তাসপিয়া আক্তার অদিতার মা স্কুল শিক্ষক রেজিয়া সুলতানা বলেন, আমার মেয়ের খুনি এখনো শাস্তি নিশ্চিত হয়নি প্রতিনিয়ত এ লজ্জা ও অপমান নিয়ে আমাকে আদালত আঙ্গিনায় ঘুরতে হচ্ছে। আমি আমার মেয়েসহ সকল নারী ও শিশুর ধর্ষক, খুনিদের দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
সোনাপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শাকিলা পারভীন বলেন, আমাদেরকে আর কতদিন ধর্ষকের বিচার দাবিতে এভাবে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে। ধর্ষক, খুনিরা আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে বলেই একের পর এক এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাহেদা পারভীন বলেন, আজকে স্বাধীন দেশে ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে, যানবাহনে একের পর এক নারী ও শিশুরা ধর্ষণের শিকার। ধর্ষণের পর নির্মম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হচ্ছে নারী ও শিশুদের। এসব ঘটনায় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও যেন অসহায় দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। লাখো শহীদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি। আমরা নারী ও শিশুসহ সবার জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ দেখতে চাই।
নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের আহবায়ক রৌশন আক্তার লাকি বলেন, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নারী, পুরুষ সবাইকে একযোগে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কোন বিকল্প নেই। এভাবে চলতে দেওয়া যায়না, এমন ভয় আতংকের জনপদ আমরা চাই না। আমরা বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। সমাবেশে অন্যান্য বক্তাগণ ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ সময় সংগঠনের প্রতিনিধি ছাড়াও শিক্ষক, সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।