নোয়াখালীতে নাগরিক অধিকার সহায়ক জোটের করোনা প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি

নোয়াখালী জেলায় করোনা সংক্রমণ অতি ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকতর হয়েছে। সরকারের নানান প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জনসমাবেশ স্থল, হাটবাজার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রয়োজনীয় শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোভিড রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রস্তুতির অপ্রতুলতা থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কোভিড পরীক্ষার অপর্যাপ্ততা ও অব্যবস্থাপনাসহ চিকিৎসা ব্যবস্থায় অপ্রতুল আইসিইউ এবং অক্সিজেন ঘাটতি রয়েছে বলে নাগরিকগণ মত প্রকাশ করেছেন।

আজ শনিবার বিকালে (৩১ জুলাই ২০২১)“করোনা প্রতিরোধে আমাদের করণীয়” শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) উক্ত দাবি সংবলিত নাগরিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। নোয়াখালী নাগরিক অধিকার সহায়ক জোট ও এনআরডিএস-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী নাগরিক অধিকার সহায়ক জোটের আহায়ক ও জেলা আইজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন। অনষ্ঠান সুঞ্চালনা করেন এনআরডিএস এর নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল।

সেমিনারে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করে বলেন,সংক্রমণ রুখতে নোয়াখালীতে লকডাউন তেমন একটা প্রভাব রাখতে পারছে না। লকডাউনের কারণে কাজ হারানো মানুষের খাদ্য অধিকারসহ জীবন ধারণের অন্যান্য প্রয়োজনীয় অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। করোনা পরীক্ষার নমুনা প্রদানের ব্যবস্থা উপজেলা ভিত্তিক হওয়ায় গ্রামের জনগণের আগ্রহ কম। নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে সম্পর্কে বিশেষ প্রচার ও প্রচারণা না থাকায় সঠিক সময় ও স্থান সম্পর্কে জনগণের ধারণা নেই। নোয়াখালীতে টিকা গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৫শতাংশের নীচে। কিন্তু এটা ৫০ শতাংশে উন্নতি করার জন্য সরকারি কোন উদ্যোগ নেই। বর্তমান স্বাস্থ্য ক্ষেতে জরুরি এ সময়ে সরকার কমিউনিটি কেন্দ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুললে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মাঝে খুব সহজেই করোনার পরীক্ষা ও টিকা নেয়া ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু বি-কেন্দ্রিকরণ করা সম্ভব হতো। সভায় আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভপিতি মো, আবু তাহের, নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের নোয়াখালী প্রতিনিধি ও দৈনিক সুবর্ণ প্রভাতের সম্পাদক আলমগীর ইউসুফ, জেলা নারী অধিকার জোটের আহবায়ক লায়লা পারভিন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বন্ধন এর পরিচালক আমিনুজ্জান মিলন,
সাংবাদিক আবদুল বারি বাবলু ও ফাইজুল ইসলাম জাহান, নারী অধিকার কর্মী নাসিমা উর্মী, নাগরিক ফোরাম সদস্য উম্মে কুলসুম ও কাজী বেলায়েত হোসেন রাজু প্রমুখ ।

সভায় মতামত জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত নাগরিক প্রতিবেদনে নাগরিকগণ নিম্নোক্ত দাবি তুলে ধরেন। তা হলো,সবার জন্য টিকা নিশ্চিতকরণ দরকার, বিশেষভাবে বয়স্ক ও কর্মজীবী মানুষদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করণ, ইউনিয়ন পরিষদ বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা রেজিস্ট্রেশন ও প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা,•কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহকে মহামারি প্রতিরোধ ও প্রতিকার করার উপযোগী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা,•সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এমবিবিএস ডাক্তার এর ব্যবস্থা করা, জরুরি সংকট মোকাবিলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে অক্সিজেন সরবরাহ,ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা , ইউনিয়ন পরিষদ সমূহে বিপদাপন্ন মানুষের খাদ্য সহায়তার আবেদন ও অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থাপনা চালু করা, স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সেবা সমূহ নিশ্চিত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা এবং বিপদাপন্ন ও নিম্নআয়ের ভুক্তভোগী নারী-পুরুষদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০