নিজস্ব প্রতিনিধি
রাজনৈতিক কোন্দল ও পুর্ব শক্রতার জের ধরে নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারশ্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদ মোল্লা ওরফে হারুন মোল্লাকে(৫৫) কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে প্রতি পক্ষের লোকজন।। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে স্থানীয় পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের চৌকিদারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পাল্টাপাল্টি হামলায় আহত হয়েছে হারুনের ছেলেসহ দুই পক্ষের ৫জন। নিহত হারুনুর রশিদের পরিবার ও উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দায়ী করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাত ১১টার দিকে পুলিশ ওই এ্লাকার পুর্ব মাইজচরা গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে মো. সোহাগ(২৪) ও একই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মিলন হোসেনকে আটক করেছে। দুইজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুধারাম থানার ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন।
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানাযায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হারুন মোল্লার মো. সজীবকে মারার জন্য একই এলাকার মৃত হোরণের ছেলেরা লোকজন নিয়ে জড়ো হচ্ছেন। এখবর হারুনুর জানার পর তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় আসলে ১৫-২০ জনের প্রতি পক্ষের একদল সন্ত্রাসী তার উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হারুনুর রশিদকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তার ভাতিজা রমিজ ও ছেলে সজীবকেও কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। রমিজকে (২২) নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত সজীবকে (১৮) স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার পর হারুনুরের পক্ষের লোকজনের হামলায় প্রতিপক্ষের গিয়াস উদ্দিনসহ (৩০) তিনজন আহত হয়েছেন। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিকে নিহত হারুনুর রশিদের পরিবার ও উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছে।
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন ভিপি অভিযোগ করে বলেন, বছরখানেক আগে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হোরণ রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হয়েছিলেন। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। এই ঘটনায় হোরণের পরিবার বিএনপির নেতা হারুনুর রশিদসহ তার পরিবারের সদস্যদের আসামি করে মামলা দায়ের করে। ওই ঘটনার জের ধরে আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপি নেতা হারুনুরকে হত্যা করেছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিনের শাহিন বলেন. ঘটনাটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয়ভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে।
সুধারাম থানার মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন জানান, পূর্ববিরোধের জেরে বিএনপির নেতা হারুনুর রশিদ প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় খুন হয়েছেন বলে তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে হারুনুর ইতিপূর্বে খুন হওয়া ইউপি সদস্য হোরণের পরিবারের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।