ছবি- সুবর্ণচরের চর আমানউল্যার একটি ভোট কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভা, সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
আজ সোমবার সকালের দিকে ভোট চলাকালে হাতিয়া উপজেলায ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর বিরুদ্ধে হামলা, হুমকি ধমকিসহ নানা অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের ২প্রার্থী এবং ৩স্বতন্ত্রসহ ৫জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। একই অভিযোগ এনে কবিরহাট পৌরসভায় ভোট বর্জন করেছে ২ কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা হলেন, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মো. হানিফ (পাঞ্জাবী) ও ৯ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (ডালিম)।
জানাযায়,সকালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বুড়িরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার প্রার্থী জিয়া আলী মোবারক কল্লোল,ও জাহাজমারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার প্রার্থী এটিএম সিরাজউদ্দিন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী চরইশ্বর ইউনিয়নে আব্দুল হালিম আজাদ, সোনাদিয়া ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম মালেশিয়া ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের মেহরাজউদ্দিন একই অভিযোগে নির্বাচন থেকে ভোট বর্জন করার ঘোষনা দেন।
অন্যদিকে জাল ভোট দেওয়ার সহযোগীতা ও নিজেরা বিভিন্ন মার্কায় সীল মারার অপরাধে হাতিয়ার ২টি ভোট কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৪ জন প্রিজাইডিং ও ২জন পোলিং অফিসারকে আটক করেছেন কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এই ৬ জন প্রিজাইডিং ও জন পোলিং অফিসারকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিয়ার নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতির তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ। তিনি জানান, আটককৃতদের হাতিয়া থানায় সোপার্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে অবগত করা হয়েছে। কমিশন আদেশ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানাযায়, ভোট চলাকালে দুপুরের দিকে উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হাতিয়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান এবং মোঃ বেলায়েত হোসেন নিজেরা বিভিন্ন মার্কায় সীল মারতে থাকেন। এ অবস্থায় সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামরুল হোসেন চৌধুরী তাদেরকে আটক করেন। আটকৃত মোঃ মাহবুবুর রহমান হাতিয়া হরনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মোঃ বেলায়েত হোসেন চৌমুহনী আরাফিয়া সিনিয়র আলিয়া মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী।
অন্যদিকে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মোজাম্মেল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার আহাম্মদ রাফি, মো: ছিদ্দিক উল্যা এবং ওই কেন্দ্রের পোলিং অফিসার মুন্নি বেগম ও ফারজানা আক্তারকে আটক করে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট ।
আটককৃত আহমেদ রাফি হৈকবাদা এম হোসেন নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোঃ সিদ্দিক উল্লা পশ্চিম সোনাদিয়া আবদুল মতিন পন্ডিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মুন্নি বেগম দক্ষিণ পূর্ব নলচিরা হাজী কালামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ফারজানা আক্তার উত্তর সোনাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরসহকারী শিক্ষক।
অপরদিকে, সুবর্ণচর উপজেলার চর আমান উল্যা ইউনিয়নের দক্ষিণ নয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থী ফেরদৌস আরা বেগমের স্বামী সাহাব উদ্দিনের ওপর অর্তকিত হামলা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় হামলাকারিরা তার বুক ও মাথায় কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এছাড়াও কয়েকটি ভোট কেন্দ্র ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
সকাল থেকে এই দুই উপজেলার বৃষ্টি ও কাদা মাটি উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্র গুলোতে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশী।