ফরজ ইবাদত সালাতের গুরুত্ব

সুবর্ণ ইসলাম কর্ণার ডেস্ক : সালাত একটি ফরজ ইবাদত। ইসলামী পরিভাষায় শরিয়তের নিয়ম মোতাবেক রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পদ্ধতিতে আল্লাহর গুণগান, রুকু-সিজদাসহ তাঁর ইবাদত করাকে সালাত বলে। বান্দার জন্য তা অবশ্যপালনীয়। শুদ্ধভাবে যারা সালাত আদায় করে আল্লাহ তাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে সুরক্ষা দেন।

আল কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদের নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো জীবনোপকরণ চাই না; আমিই আপনাকে জীবনোপকরণ দিই আর আল্লাহভীরুতার পরিণাম শুভ।’ সুরা তোয়াহা, আয়াত ১৩২।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব তারা যেন এ ঘরের (বায়তুল্লাহ) পালনকর্তার উপাসনা করে। যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে নিরাপত্তা দান করেছেন।’ সুরা কুরাইশ, আয়াত ৩-৪। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেন হে আদমসন্তান! তুমি নিজেকে আমার ইবাদতের জন্য মুক্ত করে দাও, আমি তোমার বক্ষকে ঐশ্বর্য ও অভাবহীনতা দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তোমার দারিদ্র্য ও অভাব দূর করে দেব। আর যদি তা না কর তবে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দ্বারা পূর্ণ করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব না।’ তিরমিজি, ইবনে কাসির।

উবাদা ইবনে সামেত (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে লোক নিখুঁতভাবে অজু করে সালাতে দাঁড়ায়, রুকু সিজদা সঠিকভাবে আদায় করে এবং কিরাত বিশুদ্ধভাবে পাঠ করে সালাত শেষ করে সালাত তাকে বলে তুমি আমাকে হেফাজত করেছ আল্লাহও তেমনিভাবে তোমাকে রক্ষা করুন। এরপর ওই সালাত আলোর আভা ছড়াতে ছড়াতে ঊর্ধ্বপানে উঠতে থাকে। তার জন্য আসমানের দরজাসমূহ খুলে যায়। এরপর তা আল্লাহর সমীপে পৌঁছে সেই সালাতকারীর জন্য সুপারিশ করে। আর যদি (এর বিপরীত) রুকু-সিজদা ও কিরাত সঠিক ও বিশুদ্ধভাবে সম্পন্ন না করে তবে সালাত তাকে বলে তুমি যেমন আমাকে বিনষ্ট করলে অনুরূপ আল্লাহও তোমাকে ধ্বংস করুন। অনন্তর তা অন্ধকারে আচ্ছন্ন অবস্থায় ঊর্ধ্বপানে উঠতে থাকে। তার জন্য আসমানের দুয়ারসমূহ বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই সালাতকে পুরনো কাপড়ের মতো গুটিয়ে সালাতকারীর মুখে ছুড়ে মারা হয়।’ বায়হাকি।

হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ঘোষণা করেন, ‘সালাত যেন একটি দাঁড়িপাল্লা। যে লোক এ দাঁড়িপাল্লা পরিপূর্ণ করে মেপে দেবে সে পুরস্কারও পরিপূর্ণরূপে লাভ করবে। আর যে কম করবে তবে তো জানাই আছে আল্লাহ ওজনে কমকারীদের ব্যাপারে কী ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন যারা মাপে কম করে, তাদের জন্য জাহান্নামের ওয়ায়ল নামক কূপ নির্ধারিত। বস্তু বা জমির পরিমাপে কম করা হতে পারে, তেমনি সালাতেও কম করা হতে পারে। আল্লাহ তাদের জাহান্নামের ওয়ায়ল নামক কূপের কঠোর শাস্তি দেয়ার সাবধানবাণী ঘোষণা করেছেন। ওয়ায়ল হলো জাহান্নামের তলদেশে এমন প্রখর তাপযুক্ত একটি কূপ, যার ভয়ংকর উত্তাপ থেকে স্বয়ং জাহান্নামই আল্লাহর দরবারে পরিত্রাণ কামনা করে।’ মুসনাদে আহমাদ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে সালাত আদায়ের তৌফিক দান করুন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫
    ১৬১৭১৮১৯২০২১২২
    ২৩২৪২৫২৬২৭২৮