নিজস্ব প্রতিনিধি
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে নূর হাদি নিশান (৯) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং অসুস্থ হয়েছে ২০জন। সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ ১৭ শিশুকে রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মৃত শিশু নিশান একলাশপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়া ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, এতিমখানায় শিশুরা রাতের খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১২টা সময়ে ১৮টি অসুস্থ শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একটি শিশু আগেই মারা যায়। ১৭টি শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ হওয়া অন্য শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, চিকিৎসাধীন শিশুদের মধ্যে পারভেজ হোসেন মিরাজের(১০) অবস্থা গুরুতর । অন্যরা সুস্থ আছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুরা হলো, মেহরাজ (১২), শিপন (১২), শান্ত (১০), নুর হোসেন (১০), রিফাত (৯), মামুন (১১), মারুফ (১০), আলিফ (১০), মামুন (১০), শাহীন (১০), আরমান (১০), সোহাগ (১০), আশিক (১২), আবদুর রহিম (৮), সামির (১০)ও মোজাম্মেল (১০) ।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ভোর রাতে মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ৬ জন শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার জনান, এ ঘটনায় শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অন্য দিকে শিক্ষকদের নিরাপত্তার নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। মৃত ও অসুস্থদের স্বজনদের অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জানাযায়, সোমবার দুপুরে এতিমখানার ছাত্রদের জন্য গরুর মাংস রান্না করা হয়। দুপুরে রান্না করা গরুর মাংস রাতে ছাত্রদের রাতের খাবার দেওয়া হয়। প্রথম ব্যাচে ২০ জন খেতে বসে। খাবার শুরু করার পর মাংস দুর্গন্ধ অনুভূত হলে তারা মাংস খেয়ে ভাতের সঙ্গে মিশে থাকা ঝোল দিয়ে খাওয়া শেষ করে।
এর কিছুক্ষণ পর শিশুরা একে একে অসুস্থ হতে থাকে ও বমি করা শুরু করে। তাৎক্ষণিক শিক্ষকরা স্থানীয় একজন চিকিৎসককে ডেকে এনে ঘটনা জানালে তিনি অসুস্থ শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। শিক্ষকেরা অসুস্থদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশানকে মৃত ঘোষণা করেন। আরো জানাযায়,মাদ্রাসা ও এতিমখানাটিতে ১২০ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৬১ জন এতিম শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ শিশুর খাবায় সমস্যা হচ্ছে দেখে অন্যরা আর রাতের খাবার খায়নি।
1 thought on “বেগমগঞ্জের এতিমখানায় এক শিশুর মৃত্যু, ১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি, ৬ শিক্ষক আটক”
মাদ্রাসাগুলোতে সরকারি নজরদারি বাড়ানো দরকার।