বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের শিকার সেই নারীর আদালতে সাক্ষ্য প্রদান

নিজস্ব প্রতিনিধি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশ পুরে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও চিত্র ধারণ এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায দায়েরকৃত মামলায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন বাদী ভুক্তভোগী সেই নারী (৩৮)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১এর বিচারক ( জেলা জজ) মো. জয়নাল আবদীন বহুল আলোচিত এ মামলার বাদীর সাক্ষী গ্রহণ করেন। এসময় আদালতে নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরতে গিয়ে ওই নারী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

আদালতের পিপি মামুনুর রশিদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদীর সাক্ষ্য গ্রহনকালে আদালতে মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১৩ আসামির মধ্যে ৯ জন উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তাদের মধ্যে চারজন আসামি পলাতক রয়েছে। এ ছাড়া গ্রেফতার আসামির স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে সোহাগ বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তিনি বলেন,বাদীর এসাক্ষ্য গ্রহনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরের আলোচিত ধর্ষণের চেষ্টা ও নির্যাতনের ঘটনার মামলার বিচারকাজ আরও এক ধাপ এগিয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, একইদিন একই আদালতে এর আগে ওইনারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা আরেকটি মামলায় তিনি সাক্ষী প্রদান করেন। এ ঘটনার এক বছর আগে দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ওই নারী আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে সাক্ষী প্রদান করেন। এদিকে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের কোর্ট হাজতে নেওয়ার পথে কর্তব্যরত গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর চড়াও হন দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা। তারা পুলিশের সামনেই একাধিক সাংবাদিকের হাত থেকে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং সাংবাদিকদের গালমন্দ করে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামে দেলোয়ার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে । এ সময় তারা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং পরে ওই নারী তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধারণ করা ভিডিও ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনায় সারা দেশে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।এ ঘটনায় ওই দিন (৪ অক্টোবর) রাতেই নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান সহযোগী নুর হোসেন ওরফে বাদলসহ ৯ জন কে এজহার ভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮জনকে আসামি করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন। পরে ওই নারী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার প্রধান সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে এক বছর আগে ধর্ষণের একটি মামলা করেন। পিবিআই মামলা তিনটির তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখির করে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০৩১