সুবর্ণ প্রভাত ডেস্ক : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মঙ্গলবার ছিল মহাসপ্তমী।
রাজধানীসহ সারাদেশে হিন্দু-ধর্মাবলম্বীরা পূজামন্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পূজা-অর্চণার মাধ্যমে মহাসপ্তমী উদযাপন করে। দূর্গাভক্তরা দেবীর আরাধনায় পূজামন্ডপগুলোতে দিনভর ভিড় জমায়।
সপ্তমীর সকালে আজ মঙ্গলবার পূজার শুরুতেই দেবী দূর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান করানো হয়। এরপর করা হয় নবপত্রিকা স্থাপন। নবপত্রিকার আরেক নাম হলো কলা বৌ স্নান। এছাড়া দেবীর চক্ষুদানের মাধ্যমে দেবী দূর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পূজা শেষে হাতের মুঠোয় ফুল, বেলপাতা নিয়ে ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে এবারের পূজার প্রথম অঞ্জলি দেন দেবীর পায়ে। করজোরে কাতর কণ্ঠে জগজ্জননীর কাছে করোনা মুক্ত বিশ্বের প্রার্থনা করেন ভক্তরা। ঢাকের বাদ্য, কাসর ঘন্টা কিংবা শঙ্খধ্বনিতে দেবীর আরাধনার পাশাপাশি সবেতেই যেনো ছিলো একই আর্তি।
মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে সোমবার শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মধ্যদিয়ে আগামী ১৫ অক্টোবর দূর্গোৎসব শেষ হবে।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকানুযায়ী আগামীকাল বুধবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর মহাষ্টমী বিহিত পূজা শুরু হবে। এদিন সকাল ৮টা ১৪ মিনিট থেকে ৯টা ২ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে এই সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মহাষ্টমীতে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনসহ কয়েকটি স্থানে প্রতিবছর কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবছর করোনা সংক্রমণের কারণে হচ্ছে না কুমারী পূজা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ি এ বছর সারাদেশে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে সারা দেশে ৩২ হাজার ১১৮টি পূজামন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানীতে পূজা হচ্ছে ২৩৮টি।
এবছরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গা পুজা উদযাপনের জন্য রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পূজামন্ডপগুলোতে আনসার, পুলিশ ও র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন পূজামন্ডপের প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর এবং ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি) স্থাপন করা হয়েছে।