মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুলের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

বিশেষ প্রতিনিধি:বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও জোরপূর্বক এক অতিথি শিক্ষককে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করার অভিযোগ এনে মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কফিল উদ্দিন ভূঁইয়ার অপসারণের দাবিতে জেলা শহর মাইজদীতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গন থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে সেখানে অবস্থান নিলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শিক্ষকদের আশ্বাসে তারা সড়ক থেকে সরে গিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, বছরের শুরুতে আইডি কার্ড দেয়ার কথা বলে তাদের থেকে টাকা নেয়া হয়েছে। বছরের দশ মাস পেরোলেও এখনো কোন শিক্ষার্থীকে আইডি কার্ড দেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বাস্তব প্রশিক্ষণের টাকা থেকে বিভিন্ন অযুহাতে টাকা কেটে নেয়া হয়। বিভিন্ন সময় বিনা রশিদে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি ও অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী বাবদ টাকা নেয়া হয়।এসেট প্রকল্পের বিভিন্ন লেভেলের প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল না কিনে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত মালামাল প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তাদের আরও অভিযোগ প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক ক্লাস চলাকালীন শ্রেণী কক্ষে না এসে কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও প্রকৌশল ল্যাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ না রেখে তা অন্যত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানের জেনারেটর চালু না করা, শিক্ষার্থীদের সাইকেল স্ট্যান্ড এর জন্য টাকা নিয়েও তা নির্মাণ না করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সর্বশেষ গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানের অতিথি শিক্ষক জহিরুল হককে জোরপূর্বক অব্যাহতি নিতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
দ্রুত সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কফিল উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যত্র অপসারণ, তদন্ত কমিটি করে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় হিসাব অডিট ও অতিথি শিক্ষক জহিরুল হককে পুনরায় যোগদান করানোর দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কফিল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবিই অযৌক্তিক। শিক্ষার্থীরা করো প্ররোচনায় পড়ে এসব দাবি জানাচ্ছে। তাদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বার্থান্বেষি মহল এসব করাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের কোন ফান্ডের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে টাকা উত্তোলন করতে হলে তাদের কমিশন দিতে হয়। তাছাড়া এবার ভুলক্রমে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বাস্তব প্রশিক্ষণের টাকা অন্য ফান্ডে চলে এসেছে। জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে বিশ হাজার টাকা কমিশন দিয়ে সে টাকা উত্তোলন করতে হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বাস্তব প্রশিক্ষণের টাকা থেকে কিছু টাকা কেটে নিতে হয়েছে। সাইকেল স্ট্যান্ডের জন্য ২০১৪ সাল থেকে যে পরিমাণ টাকা নেয়া হয়েছে তা এখনো ফান্ডে জমা আছে।
অতিথি শিক্ষক জহিরুল হককে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করা হয়নি উল্লেখ করে অধ্যক্ষ জানান, তিনি বিভিন্ন সময় অন্য শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টিতে সহায়তা করতেন। অতিথি শিক্ষক হয়েও সব বিষয়ে তিনি কথা বলতেন। তিনি নিজেই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি নিয়েছেন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫
    ১৬১৭১৮১৯২০২১২২
    ২৩২৪২৫২৬২৭২৮