বিশেষ প্রতিনিধিঃনোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের “কমপ্লিট শাটডাউন”আন্দোলন চলছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ আন্দোলনের নৈপথ্যে নেতৃত্বদানকারী কলেজ থেকে বহিস্কৃত চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইমন মুৎসুদ্দি । তিনি ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সহ সম্পাদক।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শিক্ষক ও ছাত্রীদের সাথে অশুভ আচরণের কারণে এই ছাত্রলীগ নেতাকে কলেজ থেকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিলো। এই বহিষ্কারাদেশ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মিশে চার শিক্ষকের পদত্যাগের আন্দোলন করছে। তার বহিষ্কার আদেশ নিয়ে এ আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে । চতুর্থবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান ছাত্রলীগের কমিটির সহ সম্পাদক হলেন ইমন মুৎসুদ্দি। তার কথাবার্তা ও আচার-আচরন খুব খারাপ। নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য সে ছাত্র ও ছাত্রীদের দিয়ে আন্দোলন করছে। দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করলেও প্রশাসন তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না করায় সে আবার “কমপ্লিট শাটডাউনে”এর নামে নতুন আন্দোলনের সৃষ্টি করেছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, এই ছাত্রলীগ নেতা নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে সকল ধরনের অপকৌশল অবলম্বন করছে। এতে করে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পাঠদানে ক্ষতি হচ্ছে। এ নতুন সরকারের আমলে কলেজ ক্যাম্পাসটাকে অশান্ত করে তুলছে। তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তার এ অপকৌশলে বৈষম্যবিরোধী সফল ছাত্র আন্দোলনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে ।
তারা আরো বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ইমন মুৎসুদ্দি বিত্রনপির চেয়ারপার্শসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় ৫ আগষ্টের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছে। এই বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস তার কাছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কটুক্তির বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে কামাখ্যা চন্দ্র দাসের সাথেও ক্যাম্পাসে অশোভন আচরন করেছে ।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস বলেন, সে একজন ছাত্রলীগের পোস্টেড কর্মী। সে আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়েও কটুক্তি করেছে। তার মাধ্যমে ছাত্রলীগ পুনর্বাসন হচ্ছে। আমার নেত্রীর বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করায় তাকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি। না হয় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ইমন মুৎসুদ্দি বলেন, আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই নানান কথা ছড়ানো হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমি যে পোস্ট করেছি- তা আমি ইতোমধ্যে ডিলিট করে দিয়েছি। আমি এক সময় ছাত্রলীগ করতাম। কিন্তু এখন তো করিনা।
আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এই ইমন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে শান্ত ক্যাম্পাসটাকে অশান্ত করে তুলেছে। সে নানান অনিয়মের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ায় সে এখন প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তার স্বার্থ্য হাসিল করেই যাচ্ছে।
সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ কামরুল হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থী ইমন উক্ত মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাকির হোসাইনের বাবা-মায়ের নাম ধরে গালি দিয়েছেন। একাডেমিক কাউন্সিলে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সে সবার সম্মুখে গালির বিষয়ে স্বীকার করে। এরপরে উক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইমন মুসুদ্দিকে গত ৭সেপ্টেম্বর দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
আন্যদিকে বুধবার শিক্ষার্থীরা নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে এবং সেই স্থলে পূর্বের নাম নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে।