লক্ষীপুর প্রতিনিধি
লক্ষীপুর জেলায় প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা এবং বাড়ছে মৃত্যু । গত ২৪ ঘন্টার নতুন করে ২০৮টি নমুনা পরীক্ষায় জেলায় ৭০ জনের শরীরে পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ২৬ জন, রায়পুর উপজেলায় ২৪ জন, কমলনগর উপজেলায় ১১ জন ও রামগতি উপজেলায় ৯ জন। মঙ্গলবার দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ৮৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৯৩৮ জন, রায়পুরে ৫১৫ জন, রামগঞ্জে ৭১৩ জন, কমলনগরে ৩৮৩ জন ও রামগতিতে ৩১৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৫৭৭ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে তিনজন সদর হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১৮৭ জন। জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে অন্যান্য উপজেলার তুলনায় করোনা পরীক্ষা, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ল²ীপুর সদর অনেক বেশী। এই উপজেলায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। অন্যান্য উপজেলায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সদরের অবস্থা নাজুক হয়ে উঠছে। এ নিয়ে সদর উপজেলার সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করলেও সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে স্বাস্থ্যবিথির মানার উদাসীনতা। বর্তমানে এই উপজেলায় দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এছাড়া ঈদের পর লক্ষীপুরের প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। করোনা আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে ওষুধ কিনে নিজের মতো করে চিকিৎসা নেয়ায় ঝুঁকি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। দিন দিন রোগ পুষে রেখে একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতালে। তখন চিকিৎসকদের আর কিছুই করার থাকে না। বিশেষজ্ঞদের অভিমত করোনা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ ও করোনা পরীক্ষা করে করোনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ১০০ শয্যার ল²ীপুর সদর হাসপাতাল এখন করোনা হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে চিকিৎসাসেবা ও করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষীপুরে করোনা রোগীদের সেবায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে তিনটি আইসিইউ বেড, পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলা রয়েছে। এছাড়া ২০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মধ্যে সদর হাসপাতালে সাতটি, রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুটি, কমলনগরে দুটি, রায়পুরে দুটি, রামগতিতে দুটি ও সিভিল সার্জনের অফিস স্টোরে পাঁচটি রয়েছে।
ল²ীপুর সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। এ জেলার জন্য এটি বিপজ্জনক। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর লগডাউন চলছে। জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থবিধি না মানার প্রবনতা এতে করে সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে। সরকারি ব্যবস্থার সাথে সাথে নিজস্ব উদ্যোগে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।