লক্ষ্মীপুরে ন্যায্য মূল্যের বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড়

মো. আবদুল মালেক,লক্ষ্মীপুরঃদ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ও সিন্ডিকেট ভাঙতে লক্ষ্মীপুরে গড়ে তোলা হয় ন্যায্য মূল্যের বাজার। অন্যান্য বাজারের চেয়ে পণ্যের দাম এখানে কম থাকায় এখানে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ভিড়। ন্যায্য মূল্যের বাজার থেকে কম মূল্যে পণ্য পেয়ে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংগঠন ও ছাত্রপ্রতিনিধিদের যৌথ সমন্বয়ে জেলাব্যাপী ১১টি সুলভ বাজার রীতিমতো সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাজার মনিটরিংয়েও গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় প্রশাসন।
মেঘনার উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর। এ জেলার প্রায় ৭০ভাগ মানুষই কৃষিজীবী। সাম্প্রতিক জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা এখন চলমান। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ম আয়ের মানুষজনকে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাজার দর নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ন্যায্য মূল্যের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। শুরুতেই নভেম্বরের শেষের দিকে জেলা শহরের জুবলী দীঘির পাড়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে সুলভ বাজার গড়ে তোলে প্রশাসন। এরপর শহরের তিতাখা মসজিদের সামনে আরেকটি ন্যায্য মূল্যের বাজার স্থাপন করা হয়। এসব বাজারে শাক সবজি থেকে শুরু করে মিলছে মাছ, মাংস ও ডিম। যেখানে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে নিয়ে আসা হয়। বাজার দর থেকে ১০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হয়। শহরের এই দুটি ন্যায্য মূল্যের বাজার ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর বর্তমানে তা বাড়িয়ে জেলার ৫টি উপজেলায় একইভাবে ১১টি বাজার স্থাপন করা হয়েছে। এ সব বাজারে লেগে থাকে সাধারণ মানুষের ভিড়।
ন্যায্য মূল্যের দোকানে আসা ভোক্তা মইনুল হোসেন, মনির, রিনা আক্তার ও পিংকি বেগম জানান, অন্যান্য বাজারের চেয়ে সুলভ বাজারে এসে কমমূল্যে পণ্য কিনে তারা বেশ খুশি।
ছাত্র প্রতিনিধি বায়েজীদ ও রাসেল জানান, সিন্ডিকেট ভাঙতে ও জনমনে স্বস্তি ফেরাতে প্রশাসনের সহায়তায় তাদের এ আয়োজন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জনমনে। সরাসরি কৃষকদের থেকে পণ্য কিনে এনে তা বাজারে বিক্রি করায় আগ্রহ বেড়েছে ক্রেতাদের। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে জেলা প্রশাসনের এই আয়োজনে সাড়া দিয়ে আমরাও বণিক সমিতির উদ্যোগে ন্যায্য মূল্যের বাজার স্থাপন করেছি। ন্যায্য মূল্যের এসব বাজারে জনসাধারণ অন্যান্য বাজারের চেয়ে অধিকাংশ পণ্য অনেক কম দামে কিনতে পারছেন। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার জানান, বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করতে ও সিন্ডিকেট ভাঙতে ন্যায্যমূল্যের বাজার, সুলভ বাজার এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এতে বিভিন্ন সংগঠন ও ছাত্র প্রতিনিধিরা এগিয়ে এসেছেন। এর সুফল পাচ্ছেন জেলাবাসী। ন্যায্য মূল্যের বাজার স্থাপনের ফলে ইতিমধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদে সিন্ডিকেট ভেঙে পড়েছে। আশাকরি এভাবে চলতে থাকলে তারা আর গুরে দাঁড়াতে পারবেনা। মানুষের মাঝে স্বস্তি না ফিরা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। একই সঙ্গে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০৩১