লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০জন

আবদুল মালেক,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ“সেবার ব্রতে চাকরি” এই স্লোগানে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি পেয়েছেন ৫০জন। এই চাকরী পেতে অনলাইন আবেদন খরচ বাবদ জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০টাকা।
গতকাল রবিবার রাতে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইনে নতুন চাকরি পাওয়া এই তরুণ-তরুণীদের পরীক্ষার চুড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন। এতে মেধার ভিত্তিতে ৪৮জন এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ সুপার। কোনো প্রকার হয়রানী, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী।
জানাগেছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় অক্টোবর ২০২৪ এর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োাগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়। এ সময় এক আনন্দঘন মুহূর্তের অবতারনা হয় পুলিশ লাইনে। নিজ যোগ্যতায় ও মেধায় চাকরীর ফলাফল পাওয়া মাত্রই ৫০জন তরুণ-তরুণী আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের ড্রিল শেড মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয় আনন্দ ও কান্নার মিলনমেলায়। অনেকের নাম ঘোষণার পরপরই দুই নয়ন অশ্রুতে ভিজে যায়। অনেকেই নতুন এই চাকরি পেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।
এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিনামূল্যে সন্তানের চাকরি পেয়ে পুলিশ সুপারকে খুশিতে জড়িয়ে ধরেন অনেক অভিভাবক।
এ বিষয়ে কথা হয় চাকরি পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, জীবনে প্রথমবার চাকরির আবেদন করে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকরী পাওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই জেলা পুলিশ সুপারকে।
পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া তরুণ-তরুণীদের কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ছেলে মেয়েদের নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনেছি সরকারী চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরী হবে কখনও চিন্তাও করিনি। এতো সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে পুলিশে চাকরী পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেল ৫০জন তরুণ-তরুণী। যারা আজ নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতায় ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ বিনিময় করতে হয়নি। তাদের মাত্র আবেদন করতে যে খরচ হয়েছে ১২০টাকা, সেটিই তাদের খরচ। আশা করছি যারা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে। তাদের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, স্মার্ট পুলিশ তৈরি করার জন্য স্বচ্ছভাবে লক্ষ্মীপুরে ৫০জনকে নিয়োগ দিয়েছি। এখানে সবাই মেধাবী। এরা রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে। ঘুস ছাড়া যেহেতু চাকরি হয়েছে তারা সৎভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন বলে আমি মনে করি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
    ১০১১১২১৩১৪
    ১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
    ২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
    ২৯৩০৩১