লক্ষ্মীপুর -বরিশাল- ভোলা জাতীয় মহাসড়ক দৃশ্যমান, ৩০ লাখ মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মেচিত হবে

Shuborno Provaat - সুবর্ণ প্রভাত

মো. আবদুল মালেক, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

জাতীয় মহা-সড়কটি বরিশাল থেকে শুরু হয়ে লাহেরহাট- ভেদুরিয়া- ভোলা হয়ে ইলিশা ফেরীঘাট থেকে নদী পথে মজুচৌধুরী ফেরীঘাট হয়ে লক্ষ্মীপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের নিকট কুমিল্লা-চাঁদপুর- লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ আঞ্চলিক মহা-সড়কের ১১০তম কিলোমিটারে মিলিত হয়েছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনসাধারণের বহু কাংক্ষিত মহা-সড়কটি বর্তমানে মুজিব বর্ষের উন্নয়নের অংশ হিসাবে ১৮ ফুট প্রশস্ততা থেকে ৩৬ ফুট প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ কাজ লক্ষ্মীপুর অংশে দৃশ্যমান হতে চলেছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এ সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে বরিশাল-ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মেচিত হবে।

নদীপথসহ সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৬৭.৭৮ কিলোমিটার। লক্ষ্মীপুর অংশে ১০.৫০ কিলোমিটার সড়ক পথ। এই ১০.৫০কিলোমিটার সড়কে গত ৩-৪ বছর কোন উন্নয়ন ও মেরামত কাজ না হাওয়াতে এ অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তির অন্ত ছিল না। সড়কটি খানাখন্দকে পরিপূর্ণ ছিল। মূল সড়কে প্রায়ই যানবাহন আটকা পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত। বর্তমানে সড়ক উন্নয়নের কাজ দৃশ্যমান হওয়াতে মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষি পণ্যসহ নদী থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ইলিশসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহণসহ জনসাধারণের অবাধ যাতায়াত সহজতর হবে।

্সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর সড়ক উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মোজাম্মেল হক মজুচৌধুরী বাজার এলাকায় সড়কের কাজ তদারকি করছেন। তার দেয়া তথ্য মতে এ কাজের ঠিকাদার মোঃ মঈনু্িদ্দন বাঁশি লিমিটেড। লক্ষ্মীপুর অংশে কাজের চুক্তিমূল্য ৮৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। কাজটি আগামী ডিসেম্বর ২০২১এর মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও বরাদ্দ অপ্রতুলতার জন্য কাজের শুরুতে ধীরগতি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমান অর্থ বছরে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে। তাই এ অর্থ বছরে সড়কের কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, এ সড়কটি লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগের একমাত্র জাতীয় মহা-সড়ক বিধায় সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হতে শুরু করে নির্বাহী প্রকৌশলী এমন কি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত নিবিড় ভাবে এ কাজের গুনগত মান পর্যবেক্ষণ করছেন। মজুচৌধুরী ফেরীঘাট থেকে বাজার পর্যন্ত ৫০০মিটার আর.সি.সি. সড়ক (রিজিড পেভমেন্ট) নির্মাণ করা হবে। তা ছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে ১০টি কালভার্ট নির্মাণ কাজও অন্তভূক্ত আছে।

বর্তমানে মজুচৌধুরী থেকে আবুলের গোজা নামক স্থান পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরন কাজ ও ১.৫০ কিলোমিটার অংশ মজবুতীকরণ কাজ চলামান রয়েছে। এই প্রশস্তকৃত অংশটি ৩৬ ফুট চওড়া অংশটিতে নির্বিঘেœ যানবাহন চলাচল করছে। পুরাতন খানা খন্দকের এখানে কোন চিহ্ন নাই। পুরাতন মূল সড়কে স্কেরিফাই করে লুজ করা হয় এবং তা ভেঙ্গে পুনঃরায় কম্পেকশন করা হচ্ছে। এর উপর বেইজ টাইপ-১ এর মিশ্রণ ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। সড়কের এ অংশে তিন স্তর পর্যন্ত কাজ চলামান দেখে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান প্রশস্তকরণ অংশে প্রথমে বালিরস্তর, পরবর্তীতে খোয়া-বালুর স্তর নির্মাণ করার পর সম্পূর্ণ প্রশস্ততায় বালু- পাথরের স্তর করা হবে বলে জানান তিনি। ঠিকাদারকে সড়ক পার্শ্ব থেকে মাটি কেটে কৃষি জমি নষ্ট করতে দেয়া হচ্ছে না। ঠিকাদার তার নিজস্ব উৎস ও ব্যবস্থাপনায় অকৃষি জমি হতে কেরি করে মাটি প্রশস্তকরণ কাজে ব্যবহার করছে।

ঠিকাদারের ষ্ট্যাক ইয়ার্ডে এসে নির্মাণ সামগ্রী ও যে সকল মালামাল ষ্ট্যাক ইয়ার্ডে আছে তার মান ভালো মনে হল। এক পার্শ্বে বেচিং প্লান্ট বসানোর কাজ চলছে। ঠিকাদারের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আমিনুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলাম বেচিং প্লান্টের কাজ কি ? তিনি বলেন, বিটুমিনাস কাজের জন্য অর্থ্যৎ বাইন্ডার কোর্স এবং ওয়েরিং কোর্স করতে বেচিং প্লান্ট ব্যবহার করবেন। তাই বেচিং প্লান্ট বসানো হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন, সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে বরিশাল-ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৩০ লক্ষ লোকের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মেচিত হবে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষি পণ্যসহ নদী থেকে আহরিত ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনসহ জনসাধারণের অবাধ যাতায়াত সহজতর হবে। কাজের গুনগত মান এর ব্যাপারে কোন চাড় দেয়া হবে না। সকল কাজ সুন্দর ভাবে যথাযথ নিয়মে সম্পন্ন করা হবে। মুজিব বর্ষের উন্নয়ণের সুফল বহে আনবে সকলের মাঝে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০৩১