নিজস্ব প্রতিনিধি
আফ্রিকার সিসিলির জাল ভিসা তৈরী করে প্রতারণার মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে আন্তজেলা প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নোয়াখালী জেলা সিআইডি পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীর কেশবপুর গ্রামের মোঃ মোহসেন আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন (৩৮) এবং নওগাঁ জেলার রাণীনগরের চকারপুকুর গ্রামের ওকিম সরকারের ছেলে মোঃ ্আজিজুল ইসলাম(৩৫)। বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকার কাফরুল থানা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের নোয়ায়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নবনীত গুহের আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে আসামি মোশারফ হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডি নোয়াখালীর বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ বশির আহমেদ জানান, প্রতারিত নোয়াখালী জেলা বেগমগঞ্জ উপজেলার পৌর করিমপুর গ্রামের মৃত আবদুল গোফরানের ছেলে মোঃ সেলিম (৩৫) ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পযর্ন্ত কাতারে চাকরি করতেন।
এসময় রাজশাহীর বাসিন্দা কাতার প্রবাসী রুহুল আমিনের সাথে কর্মক্ষেত্রে পরিচয় হয়। এ সম্পর্কের এক পর্য্যায়ে রুহুল জানায় যে, তার এক আতœীয় আফ্রিকান দেশ সিসিল প্রজাতন্ত্রে থাকে। সেখানে ভাল বেতন দেয়। বাংলাদেশ থেকে কম টাকায় লোক পাঠায়। কিছু লোক দেওয়ার জন্য সেলিমকে অনুরোধ করে। তার কথা বিশ্বাস করে ২০১৯ সালে সেলিম বাংলাদেশে চলে আসেন। রুহুল আমিনের কথামত ১ নং আসামী মোশারফের সাথে যোগাযোগ করে এবং আফ্রিকান দেশ সিসিল প্রজাতন্ত্র যাওয়ার জন্য সেলিমসহ ৪ জনের বিষয়ে চুড়ান্ত করে।
প্রতারনার শিকার সেলিম ২০২১ সালের জানুয়রী থেকে মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আসামীদেরকে ব্যাংক একাউন্টে ও অন্যান্য মাধ্যমে সর্বমোট ১০ লাখ ১ হাজার টাকা প্রদান করে। টাকা পরিষোধ শেষে প্রতারক চক্র সেলিমকে ৪টি সিসিল প্রজাতন্ত্রের ভিসা কপি দেয়। ভিসা গুলো পেয়ে তার সঠিকতা যাচাই করার জন্য গত ১২ জুলাই ঢাকাস্থ সিসিল প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসে জমা দেন তিনি। দূতাবাস থেকে তাকে জানানো হয়েছে ভিসা গুলি জাল । এ ঘটনার পর প্রতারনার শিকার মো. সেলিম প্রতারক মোশারফ ও আজিজুল ইসলালকে আসামি করে গত ১৮ আগষ্ট বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরো জানান, মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় সিআইডি নোয়াখালী মামলাটি স্ব-উদ্যোগে অধিগ্রহন করে। বাদীর দেওয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন,তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারকর্তা সিআইডি নোয়াখালীর পুলিশ পরিদর্শক মোঃ গিয়াসউদ্দিন নেতৃত্বে টিম ঢাকার কাফরুল থানা এলাকা থেকে এ দুই প্রতারকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে,তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে বিদেশগামী লোকজনদের স্বল্প খরচে বিদেশ পাঠানোর লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জালভিসা দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের নিকট থেকে প্রতারণামূলক ভাবে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। আসামীদের দেওয়া তথ্যে প্রতারক চক্রের অন্যদের স সনাক্তকরন ও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।