সুবর্ণচরে পতিত জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক, সম্প্রসারিত হচ্ছে আবাদ

সুবর্ণ প্রভাত প্রতিবেদনঃ
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পতিত ও লবনাক্ত জমিতে এবং ডোবা-নালাতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এতে করে সম্প্রসারিত হচ্ছে আবাদ, কম সময়ে বেশি ফলন পাওয়ায় গ্রীষ্মকালীন এ তরমুজ চাষে ঝুঁকছে চরঞ্চালের কৃষকরা।
উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের শিবচর এলাকার শ্রীবাস দাস একজন কৃষক । তিনি জানালেন, তার লবনাক্ত জমি খালি পড়ে থাকতো, সে জমিতে চাষ করতে পারেন,ফলন হবে,লাভবান হবেন,তা ছিল কল্পনার বাহিরে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুপ্রেরণায় আজ তার পতিত জমি থেকে আয়ের মুখ দেখেছেন । চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে এ প্রথম বার ৫০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেন তিনি । ভাল ফলন হয়েছে। এ জমিতে চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা । এখন পর্যন্ত (গতকাল সোমবার)তার তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। বাগানে থাকা তরমুজ সামনের কয়েকদিনে আরো ২০-৩০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। তরমুজ চাষ করে তিনি মহাখুশি। সামনের মৌসুমে আরো জমিতে তরমুজ চাষ করবেন বলে জানালেন শ্রীবাস দাস ।


দক্ষিণ চর মজিদের মো. সিরাজ মিয়া গত মৌসুমেও তরমুজ চাষ করেছেন ৬০ শতক জমিতে। খরচ হয়েছে তার ৩০ হাজার টাকা। গত বছর ফলন ভালো হয়েছে, লাভ পেয়েছেন ৭০ হাজার টাকা। এবার একই জমিতে চাষে ও একই টাকা খরচ হয়েছ। বাগানে ফলন ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত(গতকাল সোমবার) তার বিক্রি হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। সামনে ১০-১৫ দিনের মধ্যে বিক্রি হবে বাগানের সব তরমুজ। এবারও অনেক টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। সিরাজ মিয়া জানালেন, কৃষি কর্মকর্তার অনুপ্রেরণায় তিনি তরমুজ চাষ করতে উৎসাহি হয়েছেন। এতে করে তার আর্থিক সচ্ছলতা বেড়ে হয়েছেন স্বাবলম্বী । তার তরমুজের ভাল ফলন ও লাভ দেখে এলাকায় আরো কয়েকজন তরমুজ চাষ করেছেন।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদসহ চাষীরা

মোঃ হানিফ দক্ষিণ চরমজিদের আরেকজন কৃষক। তার এলাকার মো. সিরাজ মিয়ার তরমুজ চাষে লাভ দেখে ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুপ্রেরনায় তিনি ৯০ শতক অনাবাদি জমিতে এ মৌসুমে তরমুজ চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় খরচ ৫০ হাজার টাকা। তার ফলন আসতে আরো ১৫-২০ দিন সময় লাগবে।
ফলন ভালো হয়েছে। জানালেন অনেক টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। তার শালক ফারুকও দক্ষিণ চর মজিদ ৫০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছে সে ভালো লাভ করবে বলে জানালেন মোঃ হানিফ। শুধু হানিফ নয়.সুবর্ণচরের মৌসুমী তরমুজ চাষীরা আর্থিক সচ্ছল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মুখে মুখে প্রশংসিত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদের নাম। কারণ তিনি তাদের অনুপেরণা ও দিক নির্দেশক।
সাধারণত শীত মৌসুমে তরমুজের চাষ হয়ে থাকে। গ্রীষ্ম অথবা বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষের মৌসুম নয়। গ্রীস্মের মৌসুমে পতিতও অনাবদী জায়গায় কৃষকদের তরমুজের চাষ করতে উৎসাহিত করেছে কৃষি বিভাগ। গত বছর উপজেলা কৃষি বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার চরবাটা, পূর্ব চরবাটা, চরক্লার্ক, চরজুবলি ও ওয়াপদা ইউনিয়ন এলাকায় ৪ হেক্টর জমিতে ইয়োলো ড্রাগন, ব্লাক কুইন ও ব্লাক হানি জাতের তরমুজ চাষ করে। এই উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হওয়া চরাঞ্চলে কৃষকদের মাঝে সাড়া জাগে এবং চাষে ব্যাপকভাবে আগ্রহী হয়ে উঠে। যার ফলে চলতি মৌসুমে ১০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষে উন্নিত হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ৯৯ ভাগ সরকারি অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় বীজ, সার ও ঔষধ সরবরাহ করে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে উপযোগী।


এপ্রিল অথবা মে মাসে মালচিং, স্বজন, পেপার ব্যবহার, সমতল জমিতে মাচা পদ্ধতি ব্যবহার করে তরমুজের বীজ বপন করা হয়। এর দুই মাস পর ফলন পাওয়া যায়। পরের এক মাসের মধ্যে ফলন বিক্রি শেষ হয়। উৎপাদিত এই তরমুজ চড়া দামে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাজারে এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পাইকারী দামে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। খূচরা বাজারে ৮০-১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এ তরমুজ শীতকালীন তরমুজের চেয়েও অনেক বেশি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে ভিটামিন এ,বি,সি,ডি ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থ। এই তরমুজ চাষে মালচিং, স্বজন, পেপার ব্যবহার, সমতল জমিতে মাচা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। এবার উৎপাদিত তরমুজ জেলার বাহিরে ঢাকাতেও সরবরাহ করা হয়েছে।

তিনি জানান, ১০ হেক্টর জমির মধ্যে পূর্ব চরবাটা ৫০ ভাগ, চরবাটা ২৫ ভাগ, চরক্লার্কে ১৫ ভাগ এবং চরজুবলিতে ১০ ভাগ জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ৮২ হাজার ২৪০ টাকা। এতে উৎপাদন ফসলের লাভ ধরা হয়েছে (৬০ টাকা দামে) ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ আরও বলেন, গতানুগতি ধারায় শশা চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা যদি এ মৌসুমে সর্জন (মাছ+সবজি) পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে তাহলে তারা আরো লাভবান হবেন। গত মৌসুমে ১২জন এবং চলতি মৌসুমে ৩৬ জন কৃষক তরমুজ চাষ করেছেন। সামনে চাষীর সংখ্যা আরো বাড়বে। কৃষি বিভাগের লক্ষ্য হচ্ছে পতিত জমি চাষের আওতায় এনে তা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকদের লাভবান করা। এখনাকার উৎপাদিত তরমুজ ভবিষতে সুবর্ণচরের চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি

শেয়ার করুনঃ

308 thoughts on “সুবর্ণচরে পতিত জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক, সম্প্রসারিত হচ্ছে আবাদ”

  1. A few pharmacies keep prescription records for a long time, but many chain drugstores only keep them up to10 years.
    Checking the price of how to take prednisone 20mg for 5 days without a prescription?
    Peace of mind is just a click away Get tested for the most common STDs today Search from over 4,000 labs No appointment neededor call 866 660-2593 866 660-2593 6am-10pm CDT, 7 days a weekYou really can’t tell by looking.

  2. CREST stands for the initial letters of five common features:To further complicate the terminology, some people with diffuse disease will go on to develop calcinosis and telangiectasias so that they also have the features of CREST.
    you happen to be searching for a successful remedy, you should tadalafil liquid dosage which is available online
    This only lasted for most of the day then it stopped.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

    রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫
    ১৬১৭১৮১৯২০২১২২
    ২৩২৪২৫২৬২৭২৮