সুবর্ণ লাইফস্টাইল কর্ণার ডেস্ক : বর্ষার বিদায় আর শীতের আগের সময়টা বড় বেশি অন্যরকম! বর্ষা আর গরমের যেন শেষ হয়েও হয় না। কোথায় যেন একটা রেশ থেকে যায়। শহরে এখনো উষ্ণতা। সকাল বেলাই রোদ ঝলমল। সন্ধ্যার দিকে সামান্য তাপমাত্রা কমে আসে! শরতের এ সময়ে বলা নেই, কওয়া নেই বৃষ্টি হানা দিচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি তাই কমছেই না। যেমনই হোক আবহাওয়া। তাপমাত্রার পারদ উঠুক কিংবা নামুক, বসে থাকার জো নেই নগরের বাসিন্দাদের।
সকাল মানেই ছুটতে হচ্ছে কাজের প্রয়োজনে। ব্যস্ততা এ শহরের বাসিন্দাদের দেয় না অবসর। ভোর থেকে দৌড়ে বেড়ানো এই নাগরিকদের জন্য আজ জানাব কী করে এই সময়ে পোশাক খুঁজে পাবেন স্বস্তি। এমন আবহাওয়াতে কী কী ধরনের অস্বস্তিকর অনুভুতি হয় তা নিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল পোশাকের রঙ, কাটিং এবং নকশা নিয়ে নানা কথা। একই সঙ্গে উজ্জ্বল কিন্তু স্বস্তিদায়ক রঙ, আরামদায়ক কিন্তু নতুন ধরণের কাটিং এবং আধুনিক কিন্তু ছিমছাম নকশার খোঁজে বেশ ভাবতে হয় তাদের।
প্যাটার্ন : এ আবহাওায়াতে স্বস্তি পাওয়া যাবে নতুন প্যাটার্নের অর্থাৎ কাটিংয়ের পোশাকে। পোশাকের স্লিভে থাকতে পারে বেল স্লিভ, এবং বেশ ফ্রিল দেয়া স্লিভগুলো। কনুই অব্দি নয় বরং কনুইয়ের একটু নিচ পর্যন্ত কাটিং এবারের ফ্যাশন। নেক লাইনে ফিতা অথবা বোতামের ব্যবহার করা যেতে পারে। কুর্তির ক্ষেত্রে নেক লাইনে করতে পারেন নতুন কিছু নকশার নিরীক্ষা। নিচের অংশের কাটিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসা যেতে পারে মুন শেইপ, ওভাল শেইপ আবার কখনো বা পেছনের অংশের ঝুল রাখা যেতে পারে বেশি। সমান করে নয়, বরং বড় ছোট করে প্যাটার্নের চল চলছে এখন।
ফেব্রিক : ফেব্রিকে হালকা ধরনের ফেব্রিক প্রসঙ্গে ডিজাইনাররা জানান, এ সময়ে বাতাস চলাচল করতে পারে এবং ঘাম শুষে নেয় এমন ফেব্রিকে মিলবে স্বস্তি। এড়িয়ে যেতে হবে ভারি ফেব্রিক। সুতি, লিলেন আর তাতে বোনা ফেব্রিকে অনায়াসেই আরাম খুঁজে পাওয়া যাবে। মসৃণ ফেব্রিক এ সময়ে তৈরি করবে না অস্বস্তি। সুতা দ্বারা তৈরি করা সেলফ নকশা করা ফেব্রিকে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন বেশ সুচারুরূপে মসৃণ হয়, নয়তো শরীরে তৈরি করতে পারে অস্বস্তি।
রঙ : রঙ খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে থাকে এমন আবহাওয়াতে। তপ্ত এ দিনগুলোতে এমন রঙ বেছে নিতে হবে যা সূর্যের আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে পোশাককে রাখবে শীতল। তাপ শোষণ করতে পারে এমন রঙ এড়িয়ে যেতে হবে এ সময়ে। হালকা রঙ পোশাক নিয়ে আসবে স্বস্তি। এক্ষেত্রে বেছে নেয়া যেতে পারে প্যাস্টেল রঙগুলো। প্যাস্টেলের এক আলাদা সৌন্দর্য আছে, যা পরিধানকারীকে এনে দেয় স্নিগ্ধতা। বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল রঙও, তবে এক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে শেডের দিকে। প্রকৃতিতে থাকা রঙগুলো বেছে নেয়া যেতে পারে। সবুজের বিভিন্ন শেড, লাল, কমলা যেমন এ সময়ে দেখতে ভালো লাগবে তেমনি আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে নিয়ে আসবে স্বস্তি। কালো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো হবে এ সময়ে। সাদা বেছে নিতে পারেন চোখ বন্ধ করে। সাদা অথবা মাখন মানিয়ে যাবে খুব। চোখ যেমন শান্তি পাবে এ রঙ দেখে তেমনি পরিধানকারী থাকবে বেশ স্বচ্ছন্দ। এ রঙটি তাই একই সঙ্গে শান্তির এবং আভিজাত্যের প্রতীক।
অলংকরণ : অলংকরণ বদলে দিতে পারে একটি পোশাককে। বাহুল্য বিবর্জিত অলংকরণ বেশ চলছে এ সময়ে। ছিমছাম অলংকরণ এ সময়ের পোশাক পরিধানকারীকে যেমন স্বস্তি এনে দিবে তেমনি দর্শনকারীর চোখেও এনে দিবে শান্তি। ফুলের নকশা এ সময়ে বেশ প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাবে পোশাককে। ফুল নিজেই এক সৌন্দর্য, আর তা যখন রঙ তুলি অথবা সুই সুতার মাধ্যমে পোশাকের ক্যানভাসে ফুটে উঠে তাতে তৈরি হয় নান্দনিকতা।
জ্যামিতিক নকশাও বেশ মানিয়ে যাবে এ সময়ে। এ ধরনের নকশা বেশ একটি কাঠামোগত সৌন্দর্য নিয়ে আসতে পারে পোশাকে। জ্যামিতিক নকশার সঠিক ব্যবহার পোশাকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুন।
এ সময়ে অফিস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য কুর্তি এবং সালোয়ার কামিজ ওড়না বেছে নিতে পারেন। কুর্তির সঙ্গে পড়তে পারেন প্যান্ট অথবা পালাজ্জো। জিন্সও মানিয়ে যাবে বেশ। সঙ্গে রাখতে পারেন স্কার্ফ। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অথবা পোশাকের বিপরীত রঙের স্কার্ফ বেছে নিতে পারেন অনায়াসেই।
সালোয়ার কামিজের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে—ওড়না যেন বেশি ভারি হয়ে না যায়। ওড়না হালকা হলে পাবেন স্বস্তি। ওড়নার পারের বাহুল্য এ সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সুতির ওড়না বেছে নিতে পারেন। থাকতে পারে কোটা ফেব্রিকের ওড়না অথবা শিফন, জর্জেট।
- সর্বশেষ
- সর্বাধিক পঠিত